পৃথিবী পেল দ্বিতীয় চাঁদ, যা থাকবে ২০৮৩ পর্যন্ত

সায়েন্স ফিকশন সিনেমার গল্পের মতো শোনালেও, পৃথিবী সত্যিই নিজের জন্য একটি নতুন চাঁদ খুঁজে পেয়েছে বলে দাবি করছেন মহাকাশ পর্যবেক্ষক এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তারা সম্প্রতি শনাক্ত করেছেন যে, আমাদের পরিচিত চাঁদের পাশাপাশি আরেকটি ছোট বস্তু পৃথিবীর চারপাশে ঘূর্ণন করছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর কাছাকাছি একটি ছোট গ্রহাণু শনাক্ত করেছেন, যার নাম ২০২৫ পিএন৭। এটিকে বর্তমানে পৃথিবীর একটি ‘কোয়াসি স্যালেটাইট’ বা ‘আধা-উপগ্রহ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘২০২৫ পিএন৭’ হলো ‘কোয়াসি-স্যাটেলাইট’ নামে পরিচিত বিরল ধরনের একটি বস্তু। এই ধরনের বস্তুগুলো গ্রহের কক্ষপথের কাছাকাছি অবস্থান করে, তবে মহাকর্ষের মাধ্যমে পুরোপুরি গ্রহের সঙ্গে আবদ্ধ থাকে না।
নাসা নিশ্চিত করেছে যে এই অর্ধ-উপগ্রহটি পৃথিবীর চারপাশে একটি পথ অনুসরণ করছে এবং এটি সম্ভবত ২০৮৩ সাল পর্যন্ত এই অবস্থান বজায় রাখবে। এর মানে দাঁড়ায়, অন্তত ২১ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমাদের গ্রহের কার্যত একটি দ্বিতীয় চাঁদ রয়েছে।
‘২০২৫ পিএন৭’ আকারে খুবই ছোট। গবেষকদের অনুমান অনুযায়ী, এর আকার প্রায় ১৮ থেকে ৩৬ মিটার, যা একটি সাধারণ ভবনের উচ্চতার সমান। চলতি বছরের আগস্টে হাওয়াইয়ের হালিয়াকালা অবজারভেটরিতে প্যান-স্টারস জরিপে এই ছোট চাঁদটি প্রথম পর্যবেক্ষণ করা হয়। আর্কাইভাল ছবি দেখে বোঝা যায়, ‘২০২৫ পিএন৭’ সম্ভবত ১৯৬০ সাল থেকে কয়েক দশক ধরে পৃথিবীর সঙ্গে ভ্রমণ করছে।
তবে এটি আসল চাঁদের মতো সরাসরি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে না। পরিবর্তে, ২০২৫ পিএন৭ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এবং পৃথিবীর মতো একই পথ ধরে পৃথিবীকে অনুসরণ করে। এই কারণে আমাদের কাছে এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয় যেন পৃথিবীর দুটি চাঁদ রয়েছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ২০৮৩ সালের পর মহাকর্ষ এটিকে তার বর্তমান পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০২৫ পিএন৭ পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয়। এটি খুব ছোট এবং এর কক্ষপথও স্থিতিশীল। এই উপগ্রহটি বৈজ্ঞানিকভাবে খুবই আকর্ষণীয়, কারণ এটি আমাদের চাঁদ এবং পৃথিবীর কক্ষপথ সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে পারে। তবে এটি পুরো চাঁদের মতো সরাসরি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে না এবং এটি শুধুমাত্র একটি ‘আধা-উপগ্রহ’ হিসাবেই বিবেচিত।