বাংলার ২৪ ঘণ্টা রিপোর্ট:

পিরোজপুর-১ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী বলেছেন, “বিভেদ নয় ঐক্য চাই, স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে ঐক্য চাই। আমরা কেউ জামায়াত, কেউ বিএনপি, কেউ অন্য কোনো ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির কর্মী হতে পারি, কিন্তু আমাদের লক্ষ্য একটাই—স্বাধীন বাংলাদেশে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।”

শনিবার সকালে পিরোজপুর সদর উপজেলার শারিকতলা-ডুমুরীতলা ইউনিয়ন পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভার সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহনাজ পারভিন এবং সঞ্চালনা করেন ইউপি সচিব সুমন শিকদার। সভায় ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।

মাসুদ সাঈদী বলেন, “আমরা এমন এক বাংলাদেশে বাস করছি, যার রাজনৈতিক ইতিহাস দীর্ঘ ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের সাক্ষী। গত ১৬ বছর আমরা গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে বিরোধী মতের মানুষকে নির্যাতন, হত্যা ও মামলায় জড়িয়ে দমন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এসব নির্যাতনের পরও আমরা আরও ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, আরও দৃঢ় হয়েছি।”

তিনি বলেন, “এখন যখন জনগণের আন্দোলন সফলতার দ্বারপ্রান্তে, তখনই আমাদের ঐক্য ভাঙার ষড়যন্ত্র চলছে। শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা জনতার রোষে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এখন তারা ভেতরে ভেতরে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে ঐক্যের ভিত্তি দুর্বল করতে চায়। আমাদের সেই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।”

গঠনমূলক সমালোচনার গুরুত্ব উল্লেখ করে মাসুদ সাঈদী বলেন, “গঠনমূলক সমালোচনা ও মতভেদ গণতন্ত্রের সৌন্দর্য, তবে তা যেন ঐক্যকে দুর্বল না করে। দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। আমরা চাই, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তি একই পতাকার নিচে দাঁড়াক এবং শহীদদের রক্তে রঙিন স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলুক।”

স্বপ্নের বাংলাদেশের রূপরেখা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা এমন এক দেশ চাই, যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারবে, ভিন্ন মতের কারণে কেউ নির্যাতিত হবে না। যেখানে ইনসাফ, ন্যায়নীতি ও সুশাসন থাকবে—দুর্নীতি ও স্বৈরতন্ত্রের পরিবর্তে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আজ আমাদের অঙ্গীকার হোক—বিভেদ নয়, ঐক্য চাই। আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তি একসাথে ছিলাম, আছি এবং থাকব—যতদিন না এই দেশ থেকে ফ্যাসিবাদের শেষ চিহ্ন মুছে যায় এবং আমরা ন্যায়ভিত্তিক, শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।”

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা সিদ্দিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা আমির মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল খান, ইউপি সদস্য ময়না বেগম, শিরিন আক্তার, তপন কুমার সাহা, ইউনিয়ন জামায়াত আমির ওমর ফারুক, যুবনেতা মুবাশশির সানি, জাকারিয়া হোসেন, মামুন হোসেনসহ জামায়াত, বিএনপি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।