প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে যেসব খাবার খাবেন

শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকলে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকা সম্ভব। পুষ্টিবিদরা বলছেন, অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ওপর জোর দিতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার রাখলে সহজেই সুস্থ থাকবেন আপনি।
আট হোক কিংবা ৮০— অ্যালার্জি থেকে রেহাই পাওয়া ভীষণ মুশকিল। অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগতে পারেন যে-কেউ। এটি একটি রোগ। আবার কিছু ক্ষেত্রে অন্য রোগের উপসর্গ। তবে ত্বকের অ্যালার্জির সঙ্গে আমরা পরিচিত। কিন্তু খাদ্যনালি, শ্বাসনালি কিংবা চোখের মতো স্পর্শকাতর অঙ্গে অ্যালার্জি দেখা দিলে তার পরিণাম মারাত্মক হতে পারে। অ্যালার্জির সঠিক কারণ জানা গেলে তবেই তার চিকিৎসা সম্ভব।
আর শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকলে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকা সম্ভব। পুষ্টিবিদরা বলছেন, অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ওপর জোর দিতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার রাখলে সহজেই সুস্থ থাকবেন আপনি।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে অ্যালার্জি মুক্ত হবেন—
১. ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল ও সবজি: ভিটামিন ‘সি’ একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি হিস্টামিন নামক রাসায়নিকের নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করে। এই হিস্টামিনই অ্যালার্জির উপসর্গ তৈরি করে।
সে জন্য আপনার খাওয়া উচিত— আমলকী, কমলালেবু, স্ট্রবেরি, কিউই, পেঁপে, ক্যাপসিকাম, ব্রকোলির মতো ফল-সবজি।
২. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত মাছ: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, বিশেষ করে EPA এবং DHA, শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতেও কার্যকর। সে জন্য আপনার খাওয়া উচিত—স্যালমন, টুনা, ম্যাকেরেল বা অন্যান্য তৈলাক্ত সামুদ্রিক মাছ এবং উদ্ভিজ্জ উৎস হিসেবে আখরোট ও ফ্ল্যাক্সসিড (তিসি বীজ)।
৩. প্রোবায়োটিকস: প্রোবায়োটিক হলো উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে। অ্যালার্জি প্রতিরোধে অন্ত্রের সুস্থতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বহন করে থাকে। সে জন্য আপনার খাওয়া উচিত—টকদই, কেফির, বাটারমিল্ক।
৪. কুয়ারসেটিন যুক্ত খাবার: কুয়ারসেটিন হলো এক ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-হিস্টামিন হিসেবে কাজ করে থাকে এবং অ্যালার্জির কারণে হওয়া প্রদাহ কমায়। সে জন্য আপনার খাওয়া উচিত— পেঁয়াজ (বিশেষত লাল পেঁয়াজ), আপেল (খোসাসহ), আঙুর, বেরি, ব্রকোলি, গ্রিন টি।
৫. হলুদ: হলুদে থাকা প্রধান সক্রিয় উপাদান কারকিউমিন। এটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-অ্যালার্জিক। এটি অ্যালার্জির প্রদাহ কমাতে বিশেষভাবে পরিচিত। সে জন্য আপনার খাওয়া উচিত— কাঁচা হলুদের সঙ্গে চারটি গোলমরিচের দানা মিশিয়ে খালিপেটে খান।
তবে যে খাবারগুলো অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, সেগুলো কোনো চিকিৎসার বিকল্প নয়। এটি মূলত আপনি কিংবা আপনার শিশুর গুরুতর অ্যালার্জির সমস্যা। তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।