মনের জোরেই রোগ মুক্তি: চিকিৎসা বিজ্ঞানে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘প্লেসবো এফেক্ট’

বিশেষজ্ঞদের মতে, “প্লেসবো এফেক্ট প্রমাণ করে, মনের শক্তি অনেক সময় শরীরকে নিরাময়ের পথে নিয়ে যেতে পারে।” এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। সাধারণ মানুষের জন্যও এটি মনে করিয়ে দেয়—বিশ্বাসই অনেক সময় আরোগ্যের প্রথম ধাপ।
মফিজুল হক (তানভীর):
প্লেসবো এফেক্ট হলো এমন একটি চিকিৎসা প্রক্রিয়া যেখানে “নকল ওষুধ” বা চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকারিতা রোগীর মানসিক বিশ্বাসের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়। এটি কোনো যাদু নয়, বরং মানুষের মন ও শরীরের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক সংযোগের ফল।
কীভাবে কাজ করে?
প্লেসবো হলো নকল ওষুধ—যেমন চিনির বড়ি, সাধারণ স্যালাইন বা নকল ইনজেকশন—যার আসলে রোগ সারানোর ক্ষমতা নেই। তবে রোগী যখন বিশ্বাস করেন এটি আসল ওষুধ, তখন তাদের শরীরে আশ্চর্যজনক ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যথার রোগীরা নকল ওষুধ গ্রহণ করলেও অনেকেই ব্যথা কমে যাওয়ার রিপোর্ট দিয়েছেন।
গবেষকরা বলেন, রোগীর বিশ্বাস মস্তিষ্ককে রাসায়নিক নিঃসরণের জন্য উদ্দীপিত করে। এই রাসায়নিকগুলো ব্যথা কমাতে এবং শরীরের প্রাকৃতিক সুস্থতায় সাহায্য করে। মানসিক অবস্থার ইতিবাচক প্রভাব শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে।
চিকিৎসা গবেষণায় কেন গুরুত্বপূর্ণ?
নতুন ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকারিতা যাচাই করতে প্লেসবো অপরিহার্য। যদি কোনো ওষুধ প্লেসবোর তুলনায় বেশি কার্যকর না হয়, তবে সেটিকে কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে গণ্য করা হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি নিশ্চিত করে যে রোগীর সুস্থতা শুধুমাত্র বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে না, বরং মনের শক্তি শরীরের জটিল প্রতিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “প্লেসবো এফেক্ট প্রমাণ করে, মনের শক্তি অনেক সময় শরীরকে নিরাময়ের পথে নিয়ে যেতে পারে।” এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। সাধারণ মানুষের জন্যও এটি মনে করিয়ে দেয়—বিশ্বাসই অনেক সময় আরোগ্যের প্রথম ধাপ।
প্লেসবো এফেক্ট আমাদের শেখায় যে, শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক বিশ্বাসও সুস্থতার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তাই চিকিৎসা নিন, তবে নিজের মানসিক শক্তিকেও অমূল্য সহায়ক হিসেবে বিবেচনা করুন।