সকালের শুরু নিমপাতা দিয়ে: জানুন দারুণ স্বাস্থ্যগুণ

নিমপাতার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় সকালে খালি পেটে খেলে। প্রতিদিন সকালে ২–৩টি তাজা নিমপাতা ভালোভাবে ধুয়ে খেতে পারেন। যেহেতু নিমপাতা তেতো, তাই অনেকে সরাসরি খেতে চান না—সে ক্ষেত্রে সামান্য গুড় বা মধু যোগ করা যেতে পারে। কাঁচা নিমপাতা বা নিমের রস খেতে কষ্ট হলে রোদে শুকিয়ে তা গুঁড়া করে রসুন ও সর্ষের তেল মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
নিমের ঔষধি গুণের কথা কারও অজানা নয়। প্রাচীনকাল থেকেই নিমগাছকে বলা হয় ‘প্রাকৃতিক ওষুধের ভান্ডার’। গাছের প্রতিটি অংশ—পাতা, ডাল, এমনকি ফুলও—নানাভাবে শরীরের রোগপ্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও প্রদাহনাশক উপাদান, যা শরীরের বিভিন্ন রোগের প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবে দারুণ কার্যকর।
নিমপাতার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় সকালে খালি পেটে খেলে। প্রতিদিন সকালে ২–৩টি তাজা নিমপাতা ভালোভাবে ধুয়ে খেতে পারেন। যেহেতু নিমপাতা তেতো, তাই অনেকে সরাসরি খেতে চান না—সে ক্ষেত্রে সামান্য গুড় বা মধু যোগ করা যেতে পারে। কাঁচা নিমপাতা বা নিমের রস খেতে কষ্ট হলে রোদে শুকিয়ে তা গুঁড়া করে রসুন ও সর্ষের তেল মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
নিমপাতার অসাধারণ কিছু উপকারিতা:
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিমপাতা বিশেষভাবে কার্যকর। এটি রক্তনালী প্রসারিত করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে এবং কচি নিমপাতার রস রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হজমে উপকারী: প্রতিদিন সকালে কাঁচা নিমপাতা চিবিয়ে খেলে হজমের সমস্যা, অ্যাসিডিটি ও পেটব্যথা কমে যায়। এটি খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে পেট পরিষ্কার রাখে।
রোগপ্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে: নিমপাতায় থাকা ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। সর্দি, কাশি, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণে এটি বেশ উপকারী।
রক্ত পরিষ্কার রাখে: নিমপাতা রক্ত থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ দূর করে, ফলে ত্বক হয় উজ্জ্বল এবং শরীর থাকে রোগমুক্ত।
ত্বকের সমস্যা দূর করে: ব্রণ, একজিমা, ফোঁড়া বা চুলকানির মতো ত্বকের সমস্যায় নিমপাতা বেটে লাগালে দ্রুত উপকার মেলে। গোসলের আগে নিমপাতা ও কাঁচা হলুদ মিশিয়ে শরীরে মাখলে ত্বক আরও উজ্জ্বল হয়।
মুখের দুর্গন্ধ ও মাড়ির সমস্যা দূর করে: নিমপাতা সেদ্ধ পানি দিয়ে কুলি করলে দাঁতের পচন, মাড়ির রক্তপাত ও মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। এছাড়া নিমের ডাল দাঁতন হিসেবেও চমৎকার কাজ করে।
কৃমি নাশ ও বাতের ব্যথা উপশমে কার্যকর: শিশুর কৃমি দূর করতে নিমপাতা দারুণ কার্যকর। পাশাপাশি নিমপাতা, বীজ ও বাকল বাতের ব্যথা সারাতে সাহায্য করে। নিমের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে ব্যথা উপশম হয়।
নিমপাতা অনেক রোগের প্রাকৃতিক সমাধান হলেও এর অতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে নিমপাতা খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রকৃতির এই তেতো উপহার আসলে এক মিষ্টি আশীর্বাদ—নিয়মিত সকালে নিমপাতা খেলে শরীর, মন ও ত্বক থাকে সুস্থ ও সতেজ।
-বাংলার ২৪ ঘন্টা