কিশোরগঞ্জে পদ হারিয়ে বিএনপি নেতার আওয়ামী লীগে যোগদান

কিশোরগঞ্জ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং জিয়াউর রহমান সরকারের স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী (১৯৭৮-১৯৮২ মেয়াদের) ডা. ফজলুর করিমের ছেলে, সদ্য সাবেক বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই খবরটি ব্যাপকভাবে প্রচার করছেন।
ফয়জুল করিম মুবিন নিজেও এই যোগদানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বুধবার বিকালে ‘অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে ২ মিনিট ১২ সেকেন্ড কথা বলেন। বর্তমানে ওই পেজের প্রোফাইল পিকচারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লেখাসহ দলীয় পতাকা এবং ব্যানারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। জানা যায়, এই ফেসবুক পেজটি অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন নিজেই পরিচালনা করেন।
লাইভে এসে বিএনপি থেকে সম্পর্ক ছিন্নকারী এই নেতা বলেন, “শেখ হাসিনা যেহেতু বলেছেন, তিনি অবশ্যই দেশে ফিরবেন। আমি রাজনীতি করেছি দেশের জন্য, দলের জন্য নয়। এখন মনে করছি, দেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতি এখন নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের নয়, তিনি এই দেশের স্থিতিশীলতার প্রতীক। দেশ ও জনগণের স্বার্থে এখন ঐক্যের সময়।”
এর আগে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) একই ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে ফয়জুল করিম মুবিন ২১ অক্টোবর অসাংবিধানিক সরকার কর্তৃক জুলাই সনদের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন।
অ্যাডভোকেট ফয়জুল কবীর মুবিন দীর্ঘদিন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি জেলা বিএনপির উপ-দপ্তর সম্পাদক, পৌর বিএনপির সদস্য এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কিশোরগঞ্জ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির সম্মেলনে আগের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর গত ৫ অক্টোবর মুবিন ফেসবুকে পোস্ট করে বিএনপি থেকে পদত্যাগের কথা জানান।
চরম দুঃসময়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল, ধর্মনিরপেক্ষ দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব। ৫ আগস্টের পর মানুষের যে স্বপ্ন ছিল, চেতনা ছিল, এক বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কারের নামে সম্পদ ভোগ করার চেষ্টা চলছে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা চলছে। তাকে প্রতিহত করার জন্যই আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি।” তিনি শেখ হাসিনাকে ‘প্রকৃত দেশপ্রেমিক’ এবং ‘বাংলাদেশের মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল’ বলেও অভিহিত করেন। তবে কী পদ্ধতিতে বা কার মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগ দিলেন, সে বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
এ প্রসঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, “বিএনপিতে এখন মুবিনের কোনো পদ নেই। এছাড়া তার মাথাও ঠিক নেই। কাজেই তার আওয়ামী লীগে যোগদানেরও কোনো গুরুত্ব নেই।”