সেলিম সরকার, বগুড়া: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এর মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, ১৯৭১ সালে যেই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল ইনশাল্লাহ বলে, কোরআন-সুন্নাহর বিরোধী কিছু না করার প্রত্যয় ও কমিটমেন্টের উপর ভিত্তি করে, ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের মানুষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভিনদেশী আরেকটি রাষ্ট্রের প্রেসক্রিপশনে একটি সংবিধান চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। এদেশের মানুষের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে নতুন একটি চেতনা তৈরি করা হয়েছিল। যেই চেতনার নাম হলো ‘৭২ এর চেতনা। যেই চেতনার নামে ‘৭১ এর মুক্তিযদ্ধের চেতনাকে ছিনতাই করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের দ্বিতীয় স্বাধীনতার পরেও পতিত স্বৈরাচারী শক্তি কিন্তু বসে নেই, ষড়যন্ত্র করছে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব এই বিজয়কে ছিনতাই করার জন্য। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসরা প্রশসনসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। আমাদের কষ্টার্জিত, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে আবার কলুষিত করা জন্য।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বিগত ৫০ বছর রাজনীতি করেছেন, প্রতিশোধ গ্রহণের রাজনীতি আর বিভাজনের রাজনীতি। শেখ হাসিনা প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েই রাজনীতি শুরু করেছিল। কিন্তু তার পিতা ‘৭১ থেকে ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩০ হাজার মায়ের কোল খালি করে গুম-খুন করেছিল। শেখ হাসিনা সে কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন। এক তরফা প্রতিশোধ পরায়ণতার কারণে একজন মানসিক বৈকল্যের নাম শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বিচার হওয়া উচিত এই কারণে যে, তারা মানসিক প্রতিবন্ধী একজন সাইকো রোগীকে এত দিন ধরে মানুষের কাঁধের ওপর বসিয়ে রেখেছিল। আর এই মানসিক বিকারগ্রস্ত শেখ হাসিনা অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালিয়েছে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য। তার চেষ্টা ছিল, তার সাধনা ছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া নয়, অন্য একটি দেশের তিলকওয়ালী মূখ্যমন্ত্রী হওয়ার।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তিনি বিদেশে টাকা পাচার করেছেন বাংলাদেশকে একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করার জন্য। তিনি দেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য মেগা মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে মেগা দুর্নীতি করেছেন। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হাজার হাজার নীরিহ মানুষ হত্যার দায়ে যেকোনো মূল্যে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এদেশে আজ বিভাজন নেই। বিরোধী মত-পথের যারা এতদিন স্বৈরাচারের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, আমাদের এখন ঐক্য ধরে রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে সামান্যতম বিভেদের আভাষ পেলেই পতিত স্বৈরাচারী শক্তি আবার ষড়যন্ত্রকে শক্তিশালী করবে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামপন্থী আলেম সমাজ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিজ, জাতীয়তাবাদী ওলামায়ে ইসলামসহ সকলকে ঐকবদ্ধ থাকতে হবে দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য।
শাপলা চত্বর ও জুলাই বিপ্লবের গণহত্যার বিচারের দাবীতে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বগুড়া আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা এহসানুল হক। সমাবেশে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীসহ সাধারন মানুষ অংশ নেন।
Leave a Reply