চীনের পরিবহন মন্ত্রীর সঙ্গে নৌপরিবহন উপদেষ্টার বৈঠক

নৌপরিবহন খাতে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে চীনের সাংহাই নগরীতে সেদেশের পরিবহন মন্ত্রী লিউ ওয়েই’র সাথে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে নৌপরিবহন খাতে চলমান সহযোগিতা, বিশেষত চীনের সহযোগিতায় বাস্তবায়নাধীন মোংলা বন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া, চীনের এক্সিম ব্যাংকের সাথে চলমান চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কারিগরি সহায়তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি: নৌপরিবহন উপদেষ্টা মোংলা বন্দরকে রিজিওনাল হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চীনের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, চীনের বিভিন্ন বন্দর ক্রমবর্ধমান কার্গো এবং কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির যে দক্ষতা অর্জন করেছে, তা বাংলাদেশের বন্দরগুলোর জন্য অত্যন্ত লাভজনক হবে।
উপদেষ্টা মোংলা বন্দরের ‘এক্সপানশন এন্ড মর্ডানাইজেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্পের’ অর্থায়নের জন্য দ্রুত লোন এগ্রিমেন্টের বিষয়ে চায়না এক্সিম ব্যাংকের সাথে যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। জবাবে চীনের পরিবহন মন্ত্রী মোংলা বন্দরকে রিজিওনাল হাব ও পোর্ট সেক্টরে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চীন কর্তৃক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়া, চীনের বিখ্যাত ইয়েনতাই বন্দরের সাথে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে কাজ করার বিষয়ে সহমত পোষণ করা হয়, যা পোর্ট ফ্যাসিলিটি বৃদ্ধি করবে।
মেরিটাইম এবং কর্মসংস্থান: নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, চায়নার মেরিটাইম সেক্টর উন্নত ও আধুনিক। এক্ষেত্রে গোয়াংজু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশি সী ফেয়ারদের প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান বিনিময়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি সমুদ্রগামী জাহাজে বাংলাদেশের প্রশিক্ষিত অফিসার ও নাবিক নিয়োগের বিষয়েও চীনের মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
উন্নয়ন অংশীদার চীন: চীনের পরিবহন মন্ত্রী লিউ ওয়েই আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় চীন একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাবে। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI) এ স্বাক্ষর করার বিষয়টিকে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বৈঠকে মোংলা, চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরসহ অন্যান্য সমুদ্র ও নদীবন্দর উন্নয়নে চীনের অব্যাহত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উভয়পক্ষই এই বৈঠক দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় ও ফলপ্রসূ করে তুলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে।