আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পরই শাহজালাল কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মূল্যায়নে উচ্চ প্রশংসা লাভের কয়েক দিনের মাথায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের মোট ৩৬টি ইউনিট একযোগে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরাও এই আগুন নেভানোর কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন।
মাত্র কয়েক দিন আগেই বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি লাভ করে। গত আগস্ট মাসে যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ট্রান্সপোর্ট (ডিএফটি, ইউকে) পরিচালিত বিমানবন্দর মূল্যায়নে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সামগ্রিক নিরাপত্তা মূল্যায়নে ৯৩ শতাংশ এবং অতিরিক্ত কার্গো নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শতভাগ নম্বর অর্জন করে।
সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও এই মূল্যায়নে সমান সাফল্য দেখায়। ওসমানী বিমানবন্দর সামগ্রিক মূল্যায়নে ৯৪ শতাংশ এবং কার্গো নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শতভাগ নম্বর অর্জন করতে সক্ষম হয়। গত ১২ অক্টোবর এক বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচক জানায়, ডিএফটির পরিদর্শকরা বেবিচকের প্রস্তুতি ও সামগ্রিক কার্যক্রমে গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
বেবিচকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ডিএফটির এই এয়ারপোর্ট অ্যাসেসমেন্ট হলো যুক্তরাজ্য সরকারের একটি আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মূল্যায়ন প্রক্রিয়া। এর উদ্দেশ্য হলো বিদেশি বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রী ও কার্গো পরিবহনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা মানদণ্ড যাচাই করা। বিশেষভাবে যুক্তরাজ্য সরকারের চাওয়া অতিরিক্ত নিরাপত্তা মানদণ্ডগুলো ঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে কি না, তা এই পরিদর্শনে পর্যালোচনা করা হয়। পরিদর্শন কার্যক্রমে সরেজমিন পর্যবেক্ষণ, নীতিমালা পরীক্ষা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা যাচাই করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে কার্গো স্ক্রিনিং নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য ঢাকাগামী কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এর ফলস্বরূপ, রপ্তানির ক্ষেত্রে কার্গোগুলোকে তৃতীয় দেশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হতো, যা রপ্তানিকারকদের জন্য সময়ক্ষেপণ ও অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণ হয়েছিল। এরপর ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিতভাবে এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চালু হয় এবং বেবিচক ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আধুনিক ডিটেকশন সিস্টেম যুক্ত করে কার্গো নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করে।