এই সরকারের কারো বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আসুক না কেন কোন রকম কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দৃষ্টান্ত আমরা দেখি নাই- রুমিন ফারহানা

খ,ম,জায়েদ হোসেন,
নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া) থেকেঃ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এম পি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, আপনি যদি খুবই নিরপেক্ষভাবে দেখেন, আপনি দেখবেন শেখ হাসিনার ১৫ বছরের সাথে গত এক বছর দুই মাসের শাসনব্যবস্থার খুব একটা বেশি পার্থক্য নেই। তিনি বলেন, আমরা চৌদ্দ বছরে বা পনের বছরে দেখেছিলাম শেখ হাসিনার একেবারে যিনি পিওনের চাকরি করেছেন, তিনিও চারশো কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সম্প্রতি ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, এই সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টাদের, যারা মন্ত্রী পদমর্যাদায় আছেন তাদের এপিএসের দুর্নীতির কথা যখন আমরা শুনি, তাদের বিভিন্ন তথ্য যখন গণমাধ্যমে আসে এবং তাদের ব্যাপারে যখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, তখন শেখ হাসিনার আমলের কথাই মনে হয়।
কারণ সেই পিয়নকে উনি গণভবন থেকে বের করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো লিগাল স্টেপ উনি নেন নাই। এই সরকারেরও কারো বিরুদ্ধে যত অভিযোগই আসুক না কেন, কোনো রকম কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দৃষ্টান্ত আমরা দেখি নাই।
তিনি বলেন, উপদেষ্টা হিসেবে যারা অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেয়েছেন তাদের প্রত্যেকের সম্পদের হিসাব দেওয়ার কথা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুরুতেই বলেছিলেন। আমাদের চোখে কিন্তু এখনো কোনো উপদেষ্টাদের তথ্য আমার চোখে অন্তত পড়ে নাই। একজন দুজন হয়তো বা দিয়েছেন, সেটা পুরো ক্যাবিনেটকে রিপ্রেজেন্ট করে না।
উপদেষ্টাদের অনিয়মের বিষয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, আমরা তো কারো ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখছি না। আমি যদি একটা এক্সাম্পল ধরি, আমাদের একজন ছাত্র উপদেষ্টা আছেন এই উপদেষ্টা পরিষদে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উনার ব্যাপারে একটির পর একটি অভিযোগ এসেছে।
এখন আপনি বলতে পারেন যে, বিএনপির সঙ্গে তার এক ধরনের মনোমালিন্য আছে সে কারণেই হয়তো এই ধরনের অভিযোগগুলো আসছে। কিন্তু সেই অভিযোগগুলোর তো তদন্ত হওয়া দরকার ছিল, তাই না? অভিযোগগুলোকে খারিজ করতে হলেও তো একটা তদন্তের প্রয়োজন। সেরকম ন্যূনতম কোনো তদন্তও কিন্তু আমরা হতে দেখি নাই।
তিনি আরো বলেন, অন্য উপদেষ্টারা তুলসীপাতা কিনা জানি না, তবে তাদের পিএস-এপিএসের ব্যাপারে ভয়াবহ রকম অভিযোগ অনেকের ক্ষেত্রেই এসেছে। এবং আমি একটা কথা মনে করি যে যদি উপদেষ্টাদের কোনোরকম পজিটিভ নডিং (সম্মতি) না থাকে তাহলে কেবলমাত্র পিএস-এপিএস এর পক্ষে এত লুটপাট করা সম্ভব না।
কাজটা তো মূলত উপদেষ্টারা করবেন। স্বাক্ষরটা তো উপদেষ্টারই যাবে এবং সেই সই নিতেই তো আসলে এত দুর্নীতি।
অন্তর্বর্তী সরকার কিভাবে দেশ চালাচ্ছে সেই প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, যারা খুবই মৃদুভাবে সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের ভাষায় প্রধান উপদেষ্টা খুব নরম হাতে দেশ চালাচ্ছেন। আর যারা আসলে সমালোচনা করেন তাদের ভাষায় প্রধান উপদেষ্টা হয়ে তিনি নির্লিপ্ত। দেশে কি হচ্ছে না হচ্ছে, দেশ গোল্লায় যাচ্ছে কি না সেটা নিয়ে তার কিচ্ছু যায় আসে না অথবা তিনি আসলে বিষয়টিকে খুব খেলাচ্ছলে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, দেশ চালানোটা তো আসলে খেলাধুলা না, তাই না? এটা উনার টাইমপাস করার বিষয় নয়। এটার সঙ্গে আমাদের ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। উনি হয়তো দেশের বাইরে চলে যাবেন। ভালো উন্নত বিশ্বে উনি সম্মানের সঙ্গেই থাকবেন। কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ মানুষ যারা বাংলাদেশে জন্মেছে এবং বাংলাদেশে জীবনটা পার করে এখানেই মারা যাব, তাদের জন্য তো আসলে ওনার কর্মকাণ্ডগুলো খুব স্বস্তিদায়ক নয়।
প্রধান উপদেষ্টা দেশের চেয়ে বিদেশে থাকাকেই বেশি আরামদায়ক বা স্বস্তিদায়ক মনে করেন। ঠিক যেমনটি তিনি বিদেশি গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়াটা দেশীয় গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার চেয়ে অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক মনে করেন। এটা বলতে দুঃখ লাগে।







