নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশে নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রিদিগার লটজ বুধবার (২২ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে দায়িত্বভার গ্রহণ করায় জার্মান রাষ্ট্রদূতকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, তার কার্যকালে বাংলাদেশ ও জার্মানির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জার্মানির সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আরও বেশি সম্পৃক্ত হচ্ছে দেখে তিনি উৎসাহিত। তিনি সরকারের বিভিন্ন সংস্কার প্রচেষ্টা, বিশেষ করে জুলাই জাতীয় চার্টারের প্রশংসা করেন।
ড. লটজ উল্লেখ করেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে বসে আলোচনা করতে দেখে ভালো লাগছে।” তিনি মনে করেন, নির্বাচনের পরেও দেশের উচিত এই সংস্কার উদ্যোগগুলো অব্যাহত রাখা। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রিত করে চার্টার স্বাক্ষর করিয়ে একটি চমৎকার কাজ করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত ছিল যা একতা এবং পরিবর্তনের জন্য একটি ভাগ করা প্রতিশ্রুতি দেখায়। এটি আসন্ন নির্বাচনের আগে আস্থা বাড়াতেও সাহায্য করে।” তিনি আরও জানান, সরকার ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও আনন্দময় করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।
বৈঠকে জার্মানিতে পড়াশোনা করতে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়েও রাষ্ট্রদূত কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রদূত উভয়ই দুই দেশের মানুষের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংযোগকে স্বাগত জানান। এছাড়া, তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি এবং এই মানবিক সংকটে জার্মানির সমর্থনের বিষয়েও আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, জার্মানি ইউরোপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে নতুন রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করবেন। অধ্যাপক ইউনূস এ সময় তরুণদের ক্ষমতার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “প্রযুক্তি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে আজকের তরুণরা কথা বলতে পারে, সহজে অন্যদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে এবং অন্যায়কে চিহ্নিত করতে পারে।” তবে তিনি মিথ্যা তথ্যের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করে বলেন, “নির্বাচনের আগে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ভুল তথ্য।”