বাংলাদেশে বিনিয়োগে কোরিয়ান উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানালেন বিডা চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলের একটি হোটেলে ‘গেটওয়ে টু গ্রোথ: ইনভেস্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিনিয়োগ সেমিনারে তিনি এই আহ্বান জানান।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি সরকারি প্রতিনিধিদল এ সময় কোরিয়ান ব্যবসায়ী, শিল্পনেতা ও উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বাংলাদেশ দূতাবাস ও ফেডারেশন অব কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের (এফকেআই) যৌথ আয়োজনে এবং বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) সহযোগিতায় এই বিনিয়োগ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
আশিক চৌধুরী বলেন, এই সময়টি কোরিয়ান ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হওয়ার সবচেয়ে অনুকূল সময়। তিনি উল্লেখ করেন, সরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে একের পর এক সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির যাত্রায় অংশ নিতে অনুরোধ জানান। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে পঞ্চম বৃহত্তম বৈদেশিক বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে টেক্সটাইল, জুতা, ইলেকট্রনিকস ও অটোমোবাইলসহ বিভিন্ন খাতে ১৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১.৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
বিডার ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি তার উপস্থাপনায় টেক্সটাইল, ইলেকট্রনিকস, অটোমোবাইল ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতকে অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জনসংখ্যাগত সুবিধা, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং স্থিতিশীল অর্থনীতির কারণে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বাজারে পরিণত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট মিন-সুক লি বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠান গত চার দশকে বাংলাদেশে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে এবং ৩০ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ এখন অন্যতম বৈশ্বিক উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রদূত তৌফিক ইসলাম শতিল বলেন, বিডা ও বাংলাদেশ সরকারের সাহসী সংস্কারমূলক পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার নতুন বিনিয়োগের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছে।
ফেডারেশন অব কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী চ্যাং-বিওম কিম দুই দেশের দীর্ঘ ৫০ বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রশংসা করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, চলমান বাংলাদেশ-কোরিয়া কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) আলোচনা শেষ হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও গভীর হবে।