আজ থেকে আমরণ অনশনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

বাংলার ২৪ ঘণ্টা রিপোর্ট:
বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা ন্যূনতম দুই হাজার টাকা নির্ধারণের সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। একই সঙ্গে দেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান কর্মবিরতি আরও জোরদারের ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।
রোববার (১৯ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবিধি অনুবিভাগ থেকে জারি করা এক অফিস আদেশে বলা হয়, বাজেট সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা) প্রদান করা হবে।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়ানোর প্রাথমিক ঘোষণা দেওয়া হলেও শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামেন। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বাড়িভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায়।
রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহীদ মিনার থেকে শিক্ষা ভবনের দিকে যাত্রা শুরু করলে হাইকোর্টের মাজার গেটে পুলিশ ও বিজিবির বাধার মুখে পড়ে শিক্ষকরা। এরপর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তারা শহীদ মিনারে ফিরে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী ঘোষণা দেন,
“আমরা শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরারের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করছি। তার প্রতি কোনো আস্থা নেই। এখন আমরা প্রধান উপদেষ্টার দিকে তাকিয়ে আছি। আজ সকাল ১০টা থেকে আমরা আমরণ অনশন শুরু করছি।”
এর আগে দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিকেলে শহীদ মিনারে এসে শিক্ষকদের আন্দোলনে সংহতি জানান ডাকসু ভিপি সাদেক কায়েম।
অন্যদিকে, শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। তিনি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন,
“শিক্ষকেরা যেন ক্লাসে ফিরে গিয়ে পাঠদান শুরু করেন—এই আবেদন জানাচ্ছি।”
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং উৎসবভাতা ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে ১২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
সেদিন সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলেও দুপুরে পুলিশের অনুরোধে তারা শহীদ মিনারে যান। পরে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান ও লাঠিচার্জে শিক্ষকরা সরে যেতে বাধ্য হন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ অক্টোবর থেকে সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ রেখে লাগাতার কর্মবিরতি চলছে।