বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানে ইয়াবাসহ চারজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের এক নায়েক, দুই কনস্টেবল ও একজন আনসার সদস্য। গোয়েন্দা পুলিশের এই অভিযানে মোট ৮৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে ২০২৫) সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বগুড়া শহরের সাতমাথাস্থ হোটেল একাত্তরের সামনে অভিযান চালায় জেলা ডিবি পুলিশের একটি টিম। এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই অভিযানে প্রথমে আনসার সদস্য মোঃ আবু সুফিয়ানের দেহ তল্লাশি করে ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে একাই নয়—তার সঙ্গে আরও তিনজন পুলিশ সদস্য এই মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত।
এরপর এ আনসার সদস্যের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বাকি ১৫০ পিস ইয়াবাসহ নায়েক মোঃ আব্দুল আলীমকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ওই ইয়াবা গ্রহণ করেছিলেন বলে স্বীকার করেন। পরে তার দেয়া তথ্যানুযায়ী অপর দুই পুলিশ সদস্যকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পুরো চক্রের বিষয়টি প্রকাশ পায়।
গ্রেফতারকৃত আনসার সদস্য মোঃ আবু সুফিয়ান বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার নিজ বলাইল গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের পুত্র। গ্রেফতারকৃত অপর তিনজন হলেন, একই এলাকার আশরাফ আলীর পুত্র কনস্টেবল মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, রাজশাহী আরআরএফ-এর কনস্টেবল মোঃ আব্দুল ওয়াহাব ও পুলিশ লাইন্স, বগুড়ায় কর্মরত নায়েক মোঃ আব্দুল আলীম। সাখাওয়াত হোসেন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বশিনা বাড়ী বালুয়াহাট গ্রামের মোঃ ফারাজুল ইসলামের পুত্র এবং নায়েক মোঃ আব্দুল আলীম সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার পাড়কুল গোয়াহাট্টা গ্রামে মৃত কাজী দেলোয়ার হোসেনের পুত্র।
মাদক ব্যবসায় পুলিশ সদস্যদের জড়িত থাকার ঘটনায় বগুড়ার পুলিশ প্রশাসনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ইয়াবা পাচারের মতো গুরুতর অপরাধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সরাসরি সম্পৃক্ততা সমাজে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একইসঙ্গে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হচ্ছে বলে জেলা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
Leave a Reply