সেলিম সরকার, বগুড়া: বগুড়ায় আলুসহ আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষীরা। জেলার শিবগঞ্জ, গাবতলী ও শাজাহানপুর উপজেলায় সাধারণত বেশি পরিমাণে সবজির চাষ হয়। আর মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলা। বগুড়ার মরিচের খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে।
মাসখানেক আগে আগাম সবজি চাষ শুরু হলেও বৃষ্টির কারণে বগুড়ায় এখনো আগাম আলু চাষ পুরোদমে শুরু হয়নি। অন্যদিকে, বন্যা আর চলতি মাসে তিন-চারদিনের টানা বৃষ্টিতে সোনাতলা, সারিয়াকান্দি, শাজাহানপুর ও গাবতলীর প্রায় ২শ’ হেক্টর জমির মরিচ, আলু, লালশাক ও পালংশাকের চারা নষ্ট হয়ে গেছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) জেলার শাজাহানপুর উপজেলার বোহাইল গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের আব্দুল কাফি ও হাফিজার রহমান তাদের দেড় একর জমিতে নতুন করে লাল শাক ও পালং শাকের বীজ বপন করছেন। এসব জমিতে মাসখানেক আগে তারা লালশাক ও পালংশাকের বীজ বুনেছিলেন। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সেসব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। গাবতলীর ধনঞ্জয়গ্রামের গাজীরুল ইসলামসহ অন্য চাষীদের লালশাক ও পালংশাকের ক্ষেতের অবস্থাও একই।
তবে আশার কথা হলো, মাচায় চাষ করা পটল, করলা, লাউ, শসা, টমেটো, বরবটি ও বেডে লাগানো পেঁয়াজের ফলন নিয়ে বেশ আশাবাদী চাষীরা। গাবতলীর তরফ-সরতাজ গ্রামের কৃষক মোনতেজার, মহাস্থানের রফিকুলসহ অনেকেই মাচায় বিভিন্ন ধরনের সবজি ও বেডে পেঁয়াজের চাষ করেছেন। এসব ফসল সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে আরো সতেজ হয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাধারণত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চলে আগাম আলুর বীজ বপন। তবে বৃষ্টির কারণে এ বছর নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আলু বীজ বপন কার্যক্রম চলবে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মতলুবর রহমান জানান, চলতি মওসুমে ৪২২ হেক্টর জমিতে ৮০০৭ মেট্রিকটন আগাম সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বাইরে ১৯৫ হেক্টর জমিতে আড়াই থেকে তিন হাজার মেট্রিকটন আগাম আলু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বগুড়ায় বছরজুড়ে প্রায় ৫০ ধরনের শাকসবজি ও ফসলের চাষ হয়। এরমধ্যে আলু, বেগুন, মরিচ, টমেটো, গাজর, সীম, ফুলকপি, বাধাকপি, মূলা, লাউ, শসা, টমেটো, গাজর, শলুক পাতা, লালশাক ও পালংশাকসহ অন্তত ২০ ধরনের সবজির আগাম চাষ করা হয়। শীতের আগেই এসব সবজি বাজারে আসায় কৃষক যেমন ভালো দাম পায়, তেমনি বাজারে সবজির সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মাসখানেক পরই বাজারে দেখা মিলবে এসব আগাম সবজির। আর বীজ বপনের ৫৫ থেকে ৬০ দিন পর জমি থেকে সংগ্রহ করা যাবে আগাম চাষের নতুন আলু।
Leave a Reply