সেলিম সরকার, বগুড়া: জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেই বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য থাকবেনা। কেউ থাকবে পনেরো তলায়, আর কেউ থাকবে গাছ তলায়, এটা আমরা মানবো না। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেই বাংলাদেশে হিংসা, হানাহানি আর প্রতিশোধের রাজনীতির কবর রচিত হবে। শুধু প্রতিশোধের পর প্রতিশোধ! তাহলে এ জাতি বাঁচবে কিভাবে? এর একটা জায়গায় সমাপ্তি হওয়া উচিত।”
তিনি বলেন, “আমরা চাইনা আর কেউ জাতিকে বিভক্ত করুক। আমরা মেজরিটি মাইনোরটি শব্দ শুনতেই চাইনা। বাংলাদেশে যারাই জন্ম গ্রহণ করেছে, তারা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। সকল ধর্মের মানুষ নির্বিঘ্নে-নির্ভয়ে তাদের নিজ, নিজ ধর্ম পালন করবে। যদি মুসলমানদের মসজিদে পাহারা দেয়ার প্রয়োজন না হয়, তাহলে মন্দিরেও পাহারা দেয়ার প্রশ্ন উঠবেনা।”
শনিবার বিকেল তিনটায় শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জেলা ও শহর জামায়াত আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্ত্যব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শহর জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মো. আবিদুর রহমান সোহেল।
জামায়াত আমীর বলেন, “আমরা বলেছি দল হিসেবে ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের উপর যে বড় বড় অপরাধ করেছে আমরা তার কোনো প্রতিশোধ নেবনা। কিন্তু তারা যাদেরকে খুন করেছে, গুম করেছে, পঙ্গু করেছে, মানুষের টাকা চুরি করেছে তার প্রত্যেকটার বিচার করা হবে।”
তিনি আওয়ামীলীগকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা বলতেন যে আপনারা পালাবেন না। আজকে তাহলে পালালেন কেন? ভালো মানুষ দেশ থেকে পালায় না। আমরা কাউকে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করিনি। তাদের অপরাধই তাদেরকে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করেছে।”
তিনি বলেন, এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন আমরা সারা জাতি তাদের কাছে ঋণী। শহীদরা আমাদের জাতীয় বীর। শহীদদেরকে আমরা কোনো দলের অংশ বানাতে চাইনা। আমরা এই শহীদদেরকে জাতির গর্ব হিসেবে দেখতে চাই। তারা আমাদের জাতীয় সম্পদ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তরুণরা রক্ত দেবে, তবু অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবেনা। আমরা আগামীর বাংলাদেশকে তরুণদের হাতে তুলে দিতে চাই। যার যার মেধা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাবে। কোনো মামা-খালুর তদবির আর চলবেনা। আমরা বাংলাদেশকে বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, তারুণ্য নির্ভর এবং মানবিক বাংলাদেশ বানাতে চাই।”
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও জয়পুরহাট জেলা আমির ডা. ফজলুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোট কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার শামসুল হক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলাম রববানী, পশ্চিম জেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল হক সরকার, নায়েবে আমির আব্দুল হাকিম সরকার প্রমুখ।
এর আগে দুপুর ১২টায় জেলার ৫ হাজারের অধিক রুকন সদস্যদের নিয়ে একই স্থানে রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply