নিজস্ব প্রতিবেদক: সারা বাংলাদেশের ৫১৬ টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মরত ১৬ হাজার ২৪৬ জন নকল নবীশদের চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার অ্যাসোসিয়েশন। অথচ দেখা যায় বগুড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ১২৫ জন নকল নবিশ থাকলেও হাতেগোনা ৬-৭ জন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সকল কার্যক্রমে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। কারণ হিসেবে জানা যায়, উল্লেখিত নকল নবিশদ্বয় বগুড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারি তানজিল আল সারকারের আত্মীয়-স্বজন।
বাংলাদেশের সকল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকল-নবিশরা ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে গত অক্টোবর থেকে শুরু করে আজ বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর অদ্যবধি অবস্হান ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে তাদের চাকরি স্থায়ী করণের জন্য। আন্দোলনের অংশ হিসাবে বগুড়া জেলার সকল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকল-নবিশরা কর্মবিরতি পালন করলেও বগুড়া সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকল-নবিশ মো:আল মামুন এবং মো: আলমগীর হোসেনসহ আরও ৪-৫ জন দিব্বি অফিসিয়াল কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা এক্সট্রা মোহরার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আজিজুল হক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে জানান সারা বাংলাদেশ থেকে আমরা ঢাকায় আন্দোলনরত আছি। এ বিষয়ে সংগঠন থেকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া আছে আন্দোলন চলাকালীন সময়ে কোন নকল-নবীশ কোনো কাজ করতে পারবেন না এরপরও যদি কেউ দিনের বেলা বা রাতের আঁধারে কাজ করেন পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনে মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ, গত অক্টোবর মাস থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানিয়ে অদ্যবাদী কর্মসূচি চলছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মহান সংসদসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তি ও কর্মকর্তারা নকল নবীশদের চাকরি জাতীয়করণের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর বহু সরকারের পালাবদল ঘটে। কিন্তু নকল নবীশদের খোঁজ কেউ রাখেনি।
তারা বলেন, দেশের বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের নকল নবীশ, মিডওয়াইফারি নার্সদেরকেও রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন অধিদপ্তরের নকল নবীশদের বিষয়টি আজও সংশ্লিষ্ট দপ্তর আমলে নেননি। নকল নবীশরা সরকারি কোনো বেতন ভাতা পান না। সমাজের মানুষ জানে তারা সরকারি চাকরি করেন। কিন্তু বাস্তবে নকল নবীশরা জমির দলিলের এক পৃষ্ঠা বালামে লেখলে মাত্র ২৪ টাকা মজুরি পান।
প্রকৃতপক্ষে এক পৃষ্ঠা বালাম লেখার জন্য জনগণের কাছ থেকে সরকার রাজস্ব নেয় ৪০ টাকা। সেখান থেকে নকল নবীশদের দেওয়া হচ্ছে ২৪ টাকা। বাকি ১৬ টাকা রাজস্ব খাতে জমা হচ্ছে। নকল নবীশদের টাকা দিয়েই তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা সম্ভব। নকল নবীশদের দীর্ঘদিনের দাবি চাকরি স্থায়ী করা হোক। কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার অভাবে আমরা আজও অন্ধকারেই রয়ে গেছি।
বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন ও সহ-সভাপতি শেখ এনামুল হাসান রুমেল প্রমুখ।
Leave a Reply