বগুড়া প্রতিনিধি:
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার দায়ে বগুড়ার সমালোচিত শ্রমিকলীগ নেতা তুফান সরকারকে মোট ১৩ বছরের সাজা দিয়েছেন বগুড়ার বিশেষ জজ আদালত। বুধবার এক জনাকীর্ণ পরিবেশে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. শহিদুল্লাহ।
রায়ে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে ১০ বছরের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের জেল এবং সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে ৩ বছরের জেল ও ৩ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
এছাড়াও রায়ে তুফান সরকারের ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার ১৮২ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ দেন আদালত। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের সিনিয়র আইনজীবী মো. আবুল কালাম আজাদ।
২০১৭ সালে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও পরে ধর্ষিতা ও তার মাকে মাথ্যা ন্যাড়া করে দিয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন শ্রমিকলীগ নেতা তুফান সরকার। সে বছর ২৯ জুলাই দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তুফান সরকার বগুড়ার প্রভাবশালী আরেক শ্রমিকলীগ নেতা মতিন সরকারের ছোট ভাই। দুদকের এই মামলা ছাড়াও তুফান সরকারের বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক বিক্রি, ভূমি দস্যুতাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বগুড়া সদর থানায় তুফান সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর সহকারী পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম। মামলার অভিযোগে বলা হয়, তুফান সরকার আয়কর রিটার্নে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮৫ টাকার সম্পদের তথ্য দেখিয়েছেন। কিন্তু দুদকের নোটিশে তিনি সম্পদের সঠিক হিসাব দাখিল করেননি।
এছাড়াও তুফান সরকারের আয়ের বৈধ কোনো উৎস নেই। মামলায় দুদকের বাদী উল্লেখ করেন, তুফান সরকার ২৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এছাড়াও জ্ঞাত আয়ের সাথে সঙ্গতি বহির্ভূতভাবে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।
দীর্ঘ ৬ বছর শুনানীর পর বুধবার (২৭ নভেম্বর) বগুড়ার বিশেষ জজ আদালত তুফান সরকারকে দোষী সাব্যস্ত করে উল্লিখিত রায় দিলেন।
Leave a Reply