বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ায় বস্তাবন্দী অবস্থায় মাহাদী হাসান (৪) নামের এক অপহৃত শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মাহাদী হাসান বগুড়া শহরের নিশিন্দারা ধমকপাড়ার শফিকুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তহমিনা নামের এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার জানগ্রামে।
গ্রেফতারকৃত তহমিনা নিহত মাহাদীর মা রুবি বেগমের খালাতো বোন। অপহরণের পরদিন শুক্রবার ভোরে তহমিনার ঘরের পেছনে বস্তাবন্দি অবস্থায় মাহাদীর লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। পরে তহমিনার ঘর থেকে মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা দাবি করে লেখা একটি চিরকুট জব্দ করে স্থানীয়রা। যাতে লেখা রয়েছে ‘তোমার সন্তানকে ভালোভাবে দেখতে হলে গলির মধ্যে ৫ লাখ টাকা রেখে যাও।’
লাশ উদ্ধারের পর স্থানীয়রা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তহমিনাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈন উদ্দীন জানান, তহমিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিছুটা সুস্থ হলে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
শিশুটির বাবা শফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর থেকে মাহাদীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
স্থানীয়রা আরও জানান, তহমিনার স্বামী আলিফ উদ্দিন বগুড়া সদরের ঘোলাগাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওয়ার্কশপে কাজ করেন। আলিফের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী হলেন তহমিনা। তিন মাস আগে আলিফ ও তহমিনা ধমকপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তবে ১৫ দিন ধরে আলিফ ওই বাসায় থাকেন না। অর্থাভাবে তহমিনা শিশুটিকে অপহরণের পরিকল্পনা করে থাকতে পারেন।
পুলিশ জানায়, আশেপাশের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখা গেছে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তহমিনা শিশুটির হাত ধরে চারমাথা বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর ওই পথ ধরেই মাহাদীসহ তাঁকে বাসার দিকে ফিরে যেতে দেখা গেছে। এরপর রাতে পুলিশ তহমিনাকে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। কিন্তু তিনি স্বীকার হননি।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও সেনাসদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply