ওয়াহেদ ফকির, বগুড়া:
বগুড়া জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে একটি পত্রিকার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। গতকাল বগুড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন বগুড়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা, ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্বপ্রাপ্ত মো: এরশাদুল বারী এরশাদ।
গত ২৬ নভেম্বর দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে “বগুড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম কোচ টার্মিনালে কাউন্টার বন্ধের জের, আওয়ামী সন্ত্রাসী প্রক্সি দিচ্ছেন জামায়াত নেতা এরশাদুল বারী এরশাদ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদটিতে তাকে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ করায় এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান তিনি।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে এরশাদ বলেন, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বগুড়ার বিভিন্ন সেক্টরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আগস্টের অভ্যুত্থানের পর আত্মগোপনে চলে যান।
ফলে সেখানে নেতৃত্ব শুন্যতার পাশাপাশি সংগঠন পরিচালনা ব্যাহত হতে থাকে। এ অবস্থায় ৬ আগস্ট সাধারন মালিকদের বৈঠকে সর্বসম্মতি ক্রমে তাকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদকের কাজগুলো পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সাধারণ মালিকদের এই সিদ্ধান্ত রাজশাহী শ্রম অধিদপ্তর অনুমোদন দেন। এরপর থেকে তিনি স্বচ্ছতার সাথে সংগঠন পরিচালনা করে আসছেন। একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে সংগঠনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে মহসিন আলী রাজু কখনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবার কখনও ইনকিলাব পত্রিকায় মিথ্যা ও বিভ্রান্তমুলক তথ্য দিয়ে একের পর এক অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তার এসব কর্মকান্ডে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে। মহসিন আলী রাজু’র সাথে তার ব্যক্তিগত কোন বিরোধ না থাকলেও কোন সংবাদ প্রকাশের আগে তার কোন বক্তব্য না নিয়ে একতরফা ভাবে একের পর এক বিভ্রান্তিমুলক সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতিতে কোন সন্ত্রাসী নেই। সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা মালিক সমিতির সদস্য। প্রত্যেকের সামাজিক মান মর্যাদা রয়েছে। গঠনতন্ত্র এবং সরকারী বিধি বিধান অনুযায়ী সংগঠন পরিচালিত হয়ে আসছে। নিয়ম অনুযায়ী কোন জেলায় বাস চলাচলের রুট চালু করতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলার মালিক সমিতির সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে অনুমতি সাপেক্ষে রুট চালু হয়ে থাকে। এরপর জেলায় জেলায় টিকিট কাউন্টার চালু করা হয়।
শহরের ঠনঠনিয়া কোচ টার্মিনালে বগুড়া-কক্সবাজার রুটে বাস চলাচলের জন্য শান্ত পরিবহনের একটি কাউন্টার খোলা হয়। বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও টার্মিনাল সেক্রেটারী মোঃ জাহেদুর রহমান যাদু কার্য নির্বাহী সদস্য ও টার্মিনাল সেক্রেটারী মোঃ সামিউল ইসলাম রতন এবং কার্য নির্বাহী সদস্য ও রুট সেক্রেটারী মোঃ সুমন প্রামানিকসহ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন রানা, ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ আজাদ, ঠনঠনিয়া সকল কাউন্টারের প্রতিনিধিগনের উপস্থিতিতে টার্মিনাল অভ্যন্তরে শাখা অফিসে শান্ত পরিবহন এর ম্যানেজার উত্তম কুমারকে ডেকে পাঠানো হয়। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, বগুড়া মালিক সমিতির সাথে আলোচনা কিংবা কোন অনুমতি নিয়ে উল্লেখিত রুটে বাস চলাচল এবং কাউন্টার চালু করা হয়েছে কি না? ম্যানেজার উত্তম কুমার এ বিষয়ে সন্তোষজনক দিতে পারে নি। তখন ম্যানেজার নিজে থেকেই বলেন, অনুমতির কাগজ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি কাউন্টার খুলবেন না। এরপর তিনি নিজে থেকে কাউন্টার বন্ধ রাখেন। তাকে কোন ভয়ভীতি দেখানো কিংবা মালিক সমিতির কোন নেতা নিজ হাতে কাউন্টারের সাইনবোর্ড খুলতে যাননি।
এ ধরনের মিথ্যা এবং কাল্পনিক সংবাদ প্রকাশ করার মাধ্যমে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, ইনকিলাব এর সাংবাদিক কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন করেছেন। এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন বন্ধ না হলে আমরা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সাংগঠনিক ভাবে চিন্তা ভাবনা করবো। পাশাপাশি ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশের কারণে পত্রিকার ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
Leave a Reply