ওয়াহেদ ফকির, বগুড়া: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশে বিগত ১৫ বছরে কিছু উন্নয়ন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা সবার জন্য ছিল না। গণতন্ত্র থাকলেও তা ছিল এক শ্রেণির জন্য। দেশের সব স্তর ভেঙে ফেলা হয়েছিল, যা পুনর্গঠনে বিএনপি ৩১ দফা ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের মম ইন কনভেনশন হলে ‘কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, “এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন সহজ নয়, একে সফল করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা কাউকে প্রতিশ্রুতির ফাঁদে ফেলতে চাই না—আমরা বলছি, আমাদের অতীত দেখে, আমাদের বিশ্বাস করুন। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিএনপিই সবার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত।”
একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিএনপি উৎপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। কোনো শিল্প বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করাকে আমরা সমর্থন করি না। সরকারে গেলে বন্ধ হওয়া ২৫টি পাটকল পুনরায় চালু করা হবে এবং শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করা হবে।”
সেমিনারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ববি হাজ্জাজ। তিনি বলেন, “তারেক রহমানের ৩১ দফা ভবিষ্যতের রাজনীতির দিকনির্দেশনা। এখন রাজনৈতিক পথে বাধা সৃষ্টি করছে এমন দল, যাদের নিজেদের কোনো বৈধতা নেই, তারাই নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান গত বছরগুলোতে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এখন নতুন কিছু তরুণ এসে রাজনীতি লুন্ঠনের চেষ্টা করছে। আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে এবং নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা হোক।”
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন—অস্ট্রেলিয়ার ওয়াটার স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালিস্ট ড. ফয়সাল কবীর শুভ, বিশিষ্ট গণমাধ্যমকর্মী কাজী জেসিন, আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রিদওয়ানুল হক, মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ শারমিন সুলতানা জয়া এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জুলকারনাইন জাহাঙ্গীর।
সেমিনারে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঁচ শতাধিক নিরপেক্ষ নাগরিক অংশ নেন। তরুণ অংশগ্রহণকারীরা নানা বিষয়ে প্রশ্ন ও মতামত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু ও মাহবুবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু ও শাহীন শওকত, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম ওবায়দুর রহমান চন্দন, সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক রায়হান আমিন রনি, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, গাইবান্ধা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিক, এবং ছাত্রদল-যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতারা।
Leave a Reply