সেলিম সরকার, বগুড়া: বগুড়ায় প্রায় ২৫ লাখ টাকার সোনার গহনা ও নগদ টাকা মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে সততার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক খাইরুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটে সম্প্রতি বগুড়া শহরে।
পাবনার ফরিদপুর উপজেলার উত্তর গোপালনগরের জুয়েলারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহিন ঈদের আগে ব্যবসায়িক কাজে বগুড়া শহরে আসেন। শহরের নিউমার্কেট থেকে তিনি প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকায় ১৮ ভরি সোনার গহনা ও নগদ ১৫ হাজার টাকা একটি কালো ব্যাগে ভরে তিনি সাতমাথা মোড় থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে বগুড়ার বনানী যান।
সেখান থেকে পাবনাগামী একটি বাসে উঠে বাড়ির পথে রওনা দেন।কিন্তু মাঝপথে, শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিরা এলাকায় পৌঁছে তার মনে পড়ে ব্যাগটি তিনি ভুল করে অটোরিকশায় ফেলে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বাস থেকে নেমে পড়েন এবং বগুড়া সদর ও শাজাহানপুর থানার পুলিশের সহযোগিতা চান। পরে শাজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন। এরপর কয়েকদিন ধরে তিনি সাতমাথা এলাকায় সিএনজি চালককে খুঁজে ফিরেন, কিন্তু কোনো খোঁজ পাননি।
অন্যদিকে, চালক খাইরুল ইসলাম ব্যাগটি গাড়িতে পেয়ে তা না খুলেই যাত্রীর খোঁজ করতে থাকেন। কোথাও সন্ধান না পেয়ে তিনি ব্যাগটি নিয়ে নিজ বাড়ি, শাজাহানপুর উপজেলার বেতগাড়ি হাজীপাড়ায় চলে যান। বাড়িতে গিয়ে তিনি তার মাকে পুরো বিষয়টি জানান। খাইরুলের মা তাকে ব্যাগটি ফিরিয়ে দিতে বলেন এবং মায়ের নির্দেশে তিনি ব্যাগের প্রকৃত মালিক খুঁজে বের করার চেষ্টায় আরও সচেষ্ট হন।অনেক খোঁজাখুঁজির পরও মালিককে না পেয়ে খাইরুল ইসলাম শুক্রবার সরাসরি বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম মইনুদ্দিনের কাছে যান এবং ব্যাগটি থানায় জমা দেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে পরে জিডির তথ্য মিলিয়ে জুয়েলারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহিনকে খুঁজে বের করা হয়। গত ৪ এপ্রিল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে থানায় ডেকে এনে ব্যাগটি তার হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।সততার এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় খাইরুল ইসলামের প্রতি সাধারণ মানুষের প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অনেকে। একজন সাধারণ শ্রমজীবী হয়েও বিপুল পরিমাণ অর্থ ও মূল্যবান গহনা না রেখে ফেরত দেওয়ায় নেটিজেনদের প্রশংসায় ভাসছেন খাইরুল।
Leave a Reply