নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। শনিবার রাতে সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ দেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
তিনি বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের স্থলাভিষিক্ত হবেন। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ হাইকোর্ট বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ছিলেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মরহুম ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের সন্তান। সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে আন্দোলনের মুখে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সরে যাওয়ার পর মো. আশফাকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি করার একটি খবর চাউর হলে আন্দোলনকারীরা তা ‘প্রত্যাখ্যান’ করে গণমাধ্যমের সামনে বিবৃতি দেন। পরে জানা যায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগের তথ্যটি ‘বিভ্রান্তিকর’।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফ থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে শিক্ষা চত্বরে এক কর্মসূচি থেকে এই আলটিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আমরা আগামীকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত সময় দিলাম। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি হিসেবে সৈয়দ রিফাত আহমেদকে নিয়োগ না দিলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
বঙ্গভবন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে আজ শনিবার রাতে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পরে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ ২০০৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৫ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ লাভ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জন করেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ। দেশের বাইরেও পড়াশোনা করেছেন তিনি। সৈয়দ রেফাত আহমেদ ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তার আগে ১৯৮৪ সালে জেলা জজ আদালতের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ১৯৫৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা প্রয়াত ইশতিয়াক আহমেদ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। আর মা প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদ।
Leave a Reply