বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে রানা (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ী খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১২ টার দিকে সস্ত্রীক আত্মীয়র বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে নিজ বাসা জয়পুর পশ্চিম পাড়ায় ফেরার পথে জয়পুরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মিজানসহ দুইজন নিহতের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটলো এই খুনের ঘটনা। রানাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার স্ত্রী রোজিনা বেগমকেও ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। আহত রোজিনা বেগম বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে চিকিৎসাধীন আছেন।
নিহত রানা বগুড়া শহরতলীর জয়পুর পাড়া এলাকার প্রয়াত আজিজার রহমানের পুত্র। তিনি পেশায় একজন লোহা ব্যবসায়ী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কিছু বখাটে মাঝে মধ্যেই রানার কাছ থেকে আদালতে হাজিরাসহ নানা অজুহাতে চাঁদা নিত। দুই-তিন দিন আগে ভাতিজির বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় রিক্সাচালকের সাথে ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় রানার। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে রানার পক্ষে উপযাচক হয়ে এলাকার বখাটে যুবক ইনছান আলী ও তার সঙ্গীরা রিক্সাচালককে চড়-থাপ্পড় দেন। পরদিন ঐ রিক্সাচলকের আত্মীয়স্বজন সদলবলে এসে ইনছান আলীকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে চলে যায়।
পরে এ ঘটনায় ইনছান আলী ও তার সঙ্গীরা রানার নিকট এর বিচার দাবী করে। বিচার করতে অপারগতা প্রকাশ করলে ইনছান আলী ও তার সঙ্গীরা রানার নিকট নগদ টাকা চাঁদা দাবী করে। রানা টাকা দিতে অস্বীকার করায় ইনছান আলী ও তার সঙ্গীরা তাকে দেখে নেয়ার হুমকী দিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনার পরে মঙ্গলবার রাত বারোটার দিকে সস্ত্রীক আত্মীয় বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা রানা মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় তার স্ত্রী রোজিনা বেগম তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাকেও ছুরিকাঘাত করে। ঘটনার পরপরই গুরুতর আহতাবস্থায় এই দম্পতিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রানাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, ঘাতকদের চিহ্নিত করা গেছে। দ্রæততম সময়ে তাদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তিনি খুনীদের নাম প্রকাশ করেননি।
স্থানীয়রা জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বগুড়া সদর থানার ফুলবাড়ী পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেয়া হয়। এতে পুলিশ ফাঁড়িটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে ফাঁড়িটি বন্ধ রয়েছে। আর এতেই আবারো এই এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও মাদকসেবীদের উপদ্রব বেড়ে গেছে।
Leave a Reply