বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ায় মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্রে সম্পর্ক গড়ে দেখা করতে এসে অপহরণকারীদের কবলে পড়েছেন এক ব্যবসায়ী। বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে ঐ ব্যবসায়ীকে আটক রেখে মারধর ও চাঁদাবাজি করে অপহরণকারীরা । অপহরণকারীদের ভয়ঙ্কর চাঁদাবাজি ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দেড় লাখ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন খুইয়েছেন ঐ ব্যক্তি। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নাহিদ আকন্দ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী মোঃ জিয়াউর রহমান এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি নওগাঁ জেলার পোরশা থানার ঘাটনগর ইউনিয়নের নিসকিনপুর গ্রামের মো. আব্দুস ছালামের পুত্র। তিনি জানান, দীর্ঘ ছয় মাস ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে আসামি নাহিদ আকন্দের সাথে তার যোগাযোগ হয়। নাহিদ কাহালু উপজেলার বীরকেদার গ্রামের ঠাণ্ডু আকন্দ এর পুত্র।
গত ২৮ এপ্রিল ব্যবসার কাজে বগুড়ার শেরপুরে আসেন জিয়াউর রহমান। সেখানে অবস্থানকালে আসামি নাহিদ আকন্দ তাকে বগুড়া শহরের আকবরিয়া হোটেলে দেখা করতে বলেন। গত ৩০ এপ্রিল বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে আকবরিয়া হোটেলে গেলে নাহিদের সাথে অপর এক নারীকে উপস্থিত দেখতে পান তিনি।
সেখানে কিছু সময় কথাবার্তার পর নাহিদ তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে তারা নাহিদের ভাড়া বাসা জলেশ্বরীতলার ডি/৬০ নম্বর বাড়িতে গেলে হঠাৎ নাহিদ ও তার স্ত্রী সেতু খাতুন তাকে ঘিরে ধরে এবং ছুরি দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসময় নাহিদ কাপড় দিয়ে তার হাত-মুখ বেঁধে ফেলে।
পরে তাকে বলা হয়, দশ লক্ষ টাকা না দিলে তার সঙ্গে থাকা নারীর আপত্তিকর ছবি তুলে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে এবং ধর্ষণের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
এ সময় ভুক্তভোগীর পকেট থেকে এক লক্ষ টাকা ও একটি স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে তার মোবাইল থেকেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিকাশের মাধ্যমে আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা নেয়। এই টাকা ০১৭৫৯-০৮১১৭৫ নম্বর মোবাইলের বিকাশ একাউন্টে সেন্ডমানি করে নেয় আসামিরা।
পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানকে রাত দশটার দিকে অজ্ঞাত একটি গাড়িতে করে সাতমাথায় ফেলে দিয়ে যায় অপহরণকারীরা। এসময় বলা হয়, কারো কাছে কিছু বললে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। পরবর্তীতে বিষয়টি তিনি পরিবারের সাথে আলোচনা করে শুক্রবার বগুড়া সদর থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ঘটনার তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়ায় আসামী নাহিদকে গ্রেফতার করে। অপর আসামী নাহিদের স্ত্রী সেতু খাতুন পলাতক রয়েছে। তবে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মঈনুদ্দিন।
এই ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
Leave a Reply