সিআইডির আবেদনে খায়রুল বাহারের ৪ কোটি টাকা মূল্যের ৩ ফ্ল্যাট ক্রোক

প্রতারণার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মানিলন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কসের স্বত্বাধিকারী মো. খায়রুল বাশার বাহারের প্রায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের তিনটি ফ্ল্যাট ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত মো. খায়রুল বাশার বাহারের নামে থাকা ওই ফ্ল্যাটগুলো ক্রোক করার এবং এগুলোর তত্ত্বাবধানের জন্য রিসিভার নিয়োগের আদেশ প্রদান করেন। এটি সিআইডির চলমান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
জানা যায়, প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের এই অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলাকালে সিআইডি প্রাথমিক সাক্ষ্যপ্রমাণ পায় এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গত ০৪ মে ২০২৫ তারিখে গুলশান (ডিএমপি) থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী-২০১৫) এর ধারায় মামলা (মামলা নং-০৫) রুজু করা হয়। পরবর্তীতে, অভিযুক্ত মো. খায়রুল বাশার বাহারকে মানিলন্ডারিং মামলায় গত ১৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে ধানমন্ডি এলাকা থেকে সিআইডি গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মো. খায়রুল বাশার বাহার নিজেকে একজন শিক্ষাবিদ ও ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিলেও, এর আড়ালে তিনি বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কস নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের নেতৃত্ব দিতেন। এই চক্রটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়।
মো. খায়রুল বাশার বাহার ও তার সহযোগীরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের আমেরিকা, কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বল্প খরচে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রেরণের চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচার করতেন। এভাবে পারস্পরিক যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রাথমিক সাক্ষ্যপ্রমাণাদি পেয়েছে সিআইডি। মামলাটির প্রাথমিক তদন্তকালে সিআইডি জানতে পারে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থ ব্যবহার করে এই তিনটি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছিলেন, যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত আসামীর নামে থাকা এই সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট পরিচালনা করছে। মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান করা হচ্ছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্তকরণ এবং তাদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান জোরদারভাবে চলছে।