কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি কমার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। গত এক মাসে ১৪০ পরিবারের বসতবাড়িসহ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েকশ পরিবার। হুমকিতে রয়েছে স্থানীয় বসদবাড়ী,আবাদি জমি, হাট বাজার, মসজিদ, শিক্ষা গ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গন রোধে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নদী ভাঙ্গন এলাকাবাসী।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি কমার সাথে সাথে রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়রের ফলুয়ারচর ,পালেরচর ,বড়চর, চরশৌলমারী ইউনিয়নের সুখেরবাতি, সোনাপুর, ঘুঘুমারী,গেনাদার আলগা ও নামাজেরচর এলাকায় তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে ১৪০টি পরিবারের বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী বিলীন হয়েছে। বসতভিটা বিলীন হওয়ায় অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে অনেক পরিবার। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, এসব এলাকার ভাঙ্গন ঠেকাতে এখন পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যদিও জিও ব্যাগ ফেলা হয়, তাও নামমাত্র জিও ব্যাগ ফেলে দায় সারে কর্তৃপক্ষ।
ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা মজিদ মিয়া, মোত্তালেব হোসেন, আমিনা বেগম, বাদশা মিয়াসহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাস, সরকারী কর্মকর্তারা প্ররিদর্শন করে এক পাহাড় সমান আশ্বাস নিয়ে চলেযায় পরে কাজের কাজ কিছুই হয় না। আমাদের ভাগ্যোটাই খারাপ এদিকে বছরের পর বছর নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব হচ্ছে শত শত পরিবার। অথচ কার্যকরি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না সরকার।
নদী ভাঙ্গনের শিকার শিল্পী বেগম বলেন, এক সপ্তাহে আগে তাঁর বসতভিটা নদে বিলীন হয়ে গেছে। নিজের কোনো জমি না থাকায় অন্যের জমিতে ঠাঁই নিয়ে বাস করছেন। সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব তিনি।
নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত আমিনুল ইসলাম বলেন, তিন দিন আগে আমাগরে বসতভিটা নদে বিলীন হয়ে গেছে। তাঁর যেটুকু আবাদি জমি ছিল, তাও নদে বিলীন হয়ে গেছে। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়ে গেছি।
চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কেএইচএম সাইদুর রহমান দুলাল বলেন, প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তীব্র ভাঙ্গন। এতে বসতবাড়ি হারিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়েছে। আমাদের চোখের সামনেই সবকিছু নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার থাকে না। সরকারের কাছে আমার দাবি জরুরী ভিত্তিতে ব্রহ্মপুত্র নদের বাম তীর সংরক্ষনের জন্য দ্রæত কার্যকরি ব্যাবস্থা নেয়।
নদী ভাঙ্গন বিষয়টি নিয়ে কথা হয় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানের সঙ্গে তিনি বলেন, ঝুকি পূর্ন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ সংকটের কারণে আমরা বড়কোন কাজ শুরু করতে পারছি না।