ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভকারীদের আগুনে পুড়ল সংসদ ভবন, নিহত ৩

প্রতিবাদ শুরু হয় চলতি সপ্তাহে রাজধানী জাকার্তায়। আইনপ্রণেতাদের ভাতা কমানো, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো, কর হ্রাস এবং দুর্নীতিবিরোধী ব্যবস্থা জোরদারের দাবিতে আন্দোলনে নামে হাজারো মানুষ। তবে শুক্রবার এক পুলিশ সাঁজোয়া গাড়ির চাপায় এক রাইড-হেইলিং মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যুর পর বিক্ষোভ সহিংস আকার ধারণ করে।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ সুলাওয়েসি প্রদেশে বিক্ষোভকারীদের লাগানো আগুনে আঞ্চলিক পার্লামেন্ট ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে প্রাদেশিক রাজধানী মাকাসারে এ ঘটনা ঘটে। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা শনিবার হতাহতের এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে নিহতদের মৃত্যুর কারণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা না হলেও, রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা অন্তারা জানায়, তারা সম্ভবত ভবনের ভেতরে আটকা পড়ে দগ্ধ হন। আহতদের মধ্যে দুজন ভবন থেকে লাফিয়ে পালাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন।
বিক্ষোভের সূত্রপাত
প্রতিবাদ শুরু হয় চলতি সপ্তাহে রাজধানী জাকার্তায়। আইনপ্রণেতাদের ভাতা কমানো, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো, কর হ্রাস এবং দুর্নীতিবিরোধী ব্যবস্থা জোরদারের দাবিতে আন্দোলনে নামে হাজারো মানুষ। তবে শুক্রবার এক পুলিশ সাঁজোয়া গাড়ির চাপায় এক রাইড-হেইলিং মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যুর পর বিক্ষোভ সহিংস আকার ধারণ করে।
উত্তাল জাকার্তা ও অন্যান্য শহর
স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে জাকার্তায় লুটপাট ও ভাঙচুর হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় পরিবহন অবকাঠামো। একই সঙ্গে বান্দুং, যোগ্যাকার্তা ও অন্যান্য প্রধান শহরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শনিবারও পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো নিহত মোটরসাইকেল চালকের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি পরিস্থিতি শান্ত রাখার আহ্বান জানান। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যেকোনো নাশকতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ বিক্ষোভ প্রববো সরকারের জন্য এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণের দীর্ঘদিনের সামাজিক-অর্থনৈতিক অসন্তোষ এবং পুলিশি অভিযানের মতো বিতর্কিত ঘটনার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
যদিও সরকার এখনো জরুরি অবস্থা জারি করেনি, তবু বাজার ও ব্যবসায় মহলে অস্থিরতা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, আন্দোলন যদি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা না যায়, তবে তা ইন্দোনেশিয়ার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।