ট্রাম্পের অধিকাংশ শুল্ক আরোপ অবৈধ: যুক্তরাষ্ট্রের আদালত

ট্রাম্পের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে অন্তত আটটি মামলা দায়ের হয়েছে, এর একটি করেছে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য। তবে আদালতের এসব রায়ের পরও বাজারে তাৎক্ষণিক কোনো বড় ধরনের প্রভাব পড়েনি। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, ব্যবসায়ী মহলে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে।
ডেস্ক রিপোর্ট:
যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর অজুহাতে জাতীয় জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপকে অবৈধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক আদালত। রায়ে বিচারক জানিয়েছেন, এ পদক্ষেপ তার সাংবিধানিক ক্ষমতার বাইরে এবং অধিকাংশ শুল্কই অবৈধ। খবর রয়টার্স।
সম্প্রতি একটি আপিল আদালত জানায়, প্রেসিডেন্ট তার ক্ষমতা অতিক্রম করে এ ধরনের শুল্ক আরোপ করেছেন। এর আগে নিউইয়র্কভিত্তিক ইউ.এস. কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড একই রকম রায় দিয়েছিল। সেখানে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নিয়োগ পাওয়া একজন বিচারকও ছিলেন। পাশাপাশি ওয়াশিংটনের একটি আদালতও রায় দিয়েছে, আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (IEEPA) প্রেসিডেন্টকে এ ধরনের শুল্ক আরোপের অনুমতি দেয় না। যদিও মার্কিন সরকার এ রায়ের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই আপিল করেছে।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে অন্তত আটটি মামলা দায়ের হয়েছে, এর একটি করেছে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য। তবে আদালতের এসব রায়ের পরও বাজারে তাৎক্ষণিক কোনো বড় ধরনের প্রভাব পড়েনি। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, ব্যবসায়ী মহলে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে।
বি. রাইলি ওয়েলথের প্রধান বাজার কৌশলবিদ আর্ট হোগান বলেন, “করপোরেট আমেরিকা কিংবা বাজারের এখন সর্বশেষ যে জিনিসটি দরকার, তা হলো বাণিজ্যে আরও অনিশ্চয়তা।”
এদিকে ট্রাম্প বর্তমানে ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর লিসা কুককে অপসারণ নিয়ে আরেকটি আইনি লড়াইয়ে জড়িয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
আটলান্টিক কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান জশ লিপস্কি মন্তব্য করেন, “এটি ট্রাম্পের পুরো অর্থনৈতিক এজেন্ডাকে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘর্ষের মুখে ফেলছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ ধরনের পরিস্থিতি আগে কখনো দেখা যায়নি।”
বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীলদের ৬-৩ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আদালত প্রেসিডেন্টদের জন্য পুরনো আইনকে নতুন করে ক্ষমতার উৎস হিসেবে ব্যাখ্যা করতে অনীহা দেখিয়েছে। ফলে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই এখন মূল নির্ধারক হয়ে দাঁড়িয়েছে।