শিগগিরই ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন

গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের যে তৎপরতা আমরা দেখেছি, তাতে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো রকমের অনুশোচনা আসেনি। জাতির কাছে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি।উলটো গণ-অভ্যুত্থানকারীকে তারা অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করছে। দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্য পতিত স্বৈরাচার দিল্লিতে বসে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র লিপ্ত আছে।
ডেস্ক নিউজ:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে আসনভিত্তিক একক প্রার্থীকে বিএনপি শিগগিরই ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, প্রতিটি আসনে আমাদের একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছেন। অনেক আসনে আমাদের পাঁচজন, সাতজন এবং দশজন করে যোগ্য প্রার্থী আছেন। সুতরাং একটা নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টা আমাদের দেখতে হচ্ছে।
এখন আমরা সেই কাজটা জেলা এবং বিভাগভিত্তিক করছি। খুব শিগগিরই আসনভিত্তিক একক প্রার্থীকে মাঠে কাজ করার জন্য আমরা গ্রিন সিগন্যাল দেব। তবে সেটা চূড়ান্ত নয়। তফশিল ঘোষণার পর পার্লামেন্টারি বোর্ডের মাধ্যমে আমরা চূড়ান্ত মনোনয়ন দেব।
এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা সম্ভাব্য সব প্রার্থীর কাছে বার্তা দিয়েছি-তারা একই বক্তব্য দেবেন। যাকে ধানের শীষের প্রতীক দেওয়া হবে তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনকেন্দ্রিক কর্মসূচি নয়, গণসংযোগ হতে পারে।
কর্মসূচির কোনো বিষয় নেই। নির্বাচনকেন্দ্রিক জনসংযোগ যাতে বাড়ে এবং আমাদের বার্তা জনগণ ও ভোটারদের কাছে যায়-সে ব্যাপারে কর্মসূচি জোরদার করব। এটার কাজ চলছে। হয়তো আমরা গতি বা পরিধি বাড়াব।
সমমনাদের আসন ছাড়ের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, যাদের সঙ্গে জোট হবে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা জোটের কাছে সেই আসনগুলো চাইব বা শেয়ার করব-যে আসনগুলো জিতিয়ে নিয়ে আসতে পারব। এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।
অন্যরা তো তাদের দাবি উত্থাপন করবেনই। এনসিপির সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সালাহউদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক আলোচনা তো সব দলের সঙ্গেই হয়। এনসিপির সঙ্গেও হয়। তবে আসনভিত্তিক কোনো আলোচনা তাদের সঙ্গে আমাদের হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের যে তৎপরতা আমরা দেখেছি, তাতে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো রকমের অনুশোচনা আসেনি। জাতির কাছে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি।
উলটো গণ-অভ্যুত্থানকারীকে তারা অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করছে। দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্য পতিত স্বৈরাচার দিল্লিতে বসে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র লিপ্ত আছে।
নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারের পরে তার প্রেস সচিব এবং আইন উপদেষ্টা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তারা বলেছেন-আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা, সেটা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা নেই।
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপরে নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মাধ্যমে। আর আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসাবে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি ছিল আমাদের।
এদেশে আওয়ামী লীগ রাজনীতি ও নির্বাচন করতে পারবে কি না সেটা বিচারের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আইসিটি কোর্টে সরকারের মামলা করা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন-অনেকেই নাকি তাকে-চার-পাঁচ বছর, দশ বছর এবং ৫০ বছর থাকতে বলছেন। তবে প্রধান উপদেষ্টা এ প্রসঙ্গটা উত্থাপন না করলেও পারতেন। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ তো তিনিই (প্রধান উপদেষ্টা) ঠিক করে দিয়েছেন।