জ্বালানি তেলের দামে ধস বিশ্ববাজারে নতুন সংকেত

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম গতকাল ব্যারেলে ৫১ সেন্ট বা দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য নেমেছে ৬৮ ডলার ২৯ সেন্টে।এ সময় ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম দশমিক ৯ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৪ ডলার ২৩ সেন্টে দাঁড়িয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ব্যারেলে ৫৭ সেন্ট কম।
ডেস্ক রিপোর্ট: রাশিয়া থেকে সরবরাহ ব্যাঘাতের আশঙ্কার কারণে সোমবার বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ২ শতাংশের কাছাকাছি বেড়েছিল কিন্ত গতকাল তা কিছুটা কমে এসেছে।এজন্য প্রধানত ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্ট অনিশ্চয়তাকে দায়ী করছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম গতকাল ব্যারেলে ৫১ সেন্ট বা দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য নেমেছে ৬৮ ডলার ২৯ সেন্টে।
এ সময় ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম দশমিক ৯ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৪ ডলার ২৩ সেন্টে দাঁড়িয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ব্যারেলে ৫৭ সেন্ট কম।
দাম কমার বিষয়ে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ব্যাংকিং ও আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের বিশ্লেষক জিওভানি স্টাউনোভো বলেন, ‘ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণেই জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। একই কারণে পুঁজিবাজারে শেয়ার সূচকেও পতন দেখা গেছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির অগ্রগতি না হলে রাশিয়ার ওপর শুল্কারোপের হুমকি জানিয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট কিছু সূত্র জানিয়েছে, চলতি মাসের শান্তি আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের কর্মকর্তারা বিভিন্ন জ্বালানি চুক্তি নিয়েও আলোচনা করেছেন।
বর্তমানে বিভিন্ন ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাবে বাজারের ওঠানামার দিকে বিনিয়োগকারীদের নজর রাখা প্রয়োজন। বিশেষত রাশিয়া-ইউক্রেন বৈঠক না হলে ট্রাম্প কী পদক্ষেপ নেবেন সেদিকে নজর দেয়া জরুরি।
পিভিএম অয়েল অ্যাসোসিয়েটসের বিশ্লেষক তামাস ভারগা বলেন, ‘ইউক্রেনের সংঘাত ও শুল্ক যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের বাজারে অনিশ্চয়তা বেশি। এতে বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে কোনো সিদ্ধান্ত নির্ধারণে অনিচ্ছুক।’
তিনি জানান, মধ্যমেয়াদে ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৫-৭৪ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে।
সাক্সো ব্যাংকের পণ্যবাজার বিশ্লেষক ওলে হ্যানসেন বলেন, ‘রাশিয়ার জ্বালানি তেল ক্রয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য মার্কিন শুল্কও বাজারে প্রভাব ফেলছে।’
এর আগে ইউক্রেন রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। সম্প্রতি দেশটির হামলায় রাশিয়ার নোভোশাখটিনস্ক রিফাইনারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ অঞ্চলের গভর্নর। প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক পরিশোধন সক্ষমতা ৫০ লাখ টন বা দৈনিক প্রায় এক লাখ ব্যারেল।
হ্যানসেন এ বিষয়ে জানান, রাশিয়ার সরবরাহে সম্ভাব্য বিঘ্নের প্রভাব কাটিয়ে তুলেছে ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর উত্তোলন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত। আগস্টে কয়েকটি দেশ উত্তোলন বাড়িয়েছে। সামনের মাসেও উত্তোলন আরো বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে।
তবে ব্রোকার ফার্ম ফিলিপ নোভার সিনিয়র মার্কেট অ্যানালিস্ট প্রিয়াংকা সাচদেবা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে না। কারণ বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ট্রাম্পের শুল্ক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে।’