জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের প্রয়োজন নেই: বিএনপি

বিএনপির নেতারা মনে করেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মূল শক্তি হলো রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার। দলগুলো সনদে স্বাক্ষর করে জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। কেউ অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের জবাব দেবে। বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। বিশেষ করে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ‘পিআর পদ্ধতি না হলে নির্বাচন নয়’ কিংবা ‘ফেব্রুয়ারিতে ভোট সম্ভব নয়’— এসব বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটি মত দেয়, গণতান্ত্রিক পরিবেশে ভিন্নমত প্রকাশ স্বাভাবিক। এসব বক্তব্য রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হতে পারে, তবে এ নিয়ে বিএনপি কোনো দ্বন্দ্বে যাবে না।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট বা গণপরিষদের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করছে বিএনপি। দলের মতে, এ ধরনের চিন্তা বাস্তবসম্মত নয়, বরং এটি একটি অলীক ধারণা। গণভোট সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ইস্যুতে হয়, কিন্তু জুলাই সনদে একাধিক ইস্যু অন্তর্ভুক্ত থাকায় তা নিয়ে গণভোট আয়োজন সম্ভব নয়। নেতাদের ভাষ্য, জুলাই সনদ রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের সামনে অঙ্গীকার, আর সেই অঙ্গীকারই আইনের চেয়েও বেশি শক্তিশালী।
গত সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে জুলাই সনদের অগ্রগতি নিয়ে অবহিত করেন। আলোচনায় নেতারা বলেন, গণভোট সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ইস্যুতে হয়, কিন্তু জুলাই সনদে একাধিক ইস্যু অন্তর্ভুক্ত থাকায় তা নিয়ে গণভোট আয়োজন সম্ভব নয়। একইভাবে গণপরিষদ গঠনের প্রশ্নও অবান্তর, কারণ দেশে সংবিধান বিদ্যমান এবং অন্তর্বর্তী সরকার সেই সংবিধানের অধীনেই দায়িত্ব পালন করছে।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যেসব সংস্কার প্রস্তাব সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাহী আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়ন করতে পারে। আর সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন এমন সংস্কার প্রস্তাবগুলো নির্বাচিত সংসদই করবে।
বিএনপির নেতারা মনে করেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মূল শক্তি হলো রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার। দলগুলো সনদে স্বাক্ষর করে জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। কেউ অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের জবাব দেবে।
বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। বিশেষ করে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ‘পিআর পদ্ধতি না হলে নির্বাচন নয়’ কিংবা ‘ফেব্রুয়ারিতে ভোট সম্ভব নয়’— এসব বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটি মত দেয়, গণতান্ত্রিক পরিবেশে ভিন্নমত প্রকাশ স্বাভাবিক। এসব বক্তব্য রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হতে পারে, তবে এ নিয়ে বিএনপি কোনো দ্বন্দ্বে যাবে না।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ ও প্রশাসনে হওয়া বদলি-রদবদল নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব পরিবর্তনের সঙ্গে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে সরকার চাইলে বিএনপি সহযোগিতা করতে পারে এবং এজন্য দল নির্দিষ্ট একজনকে সমন্বয়ের দায়িত্ব অর্পণ করবে। কিন্তু বিনা কারণে বিএনপির নাম এসব বদলির সঙ্গে জড়িয়ে দেয়া কোনোভাবেই কাম্য নয় বলেও মন্তব্য করেন নেতারা।