ঢাকায় স্বামীর নির্যাতনে প্রাণ গেলো বগুড়ার ফাহিমার

তার এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী জানান, প্রায় দেড় বছর আগে ফাহিমা তার সাথে যোগাযোগ করে এক ব্যক্তির অনৈতিক সম্পর্কের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মুখ ফুটে স্বীকার করেননি যে লোকটি তার স্বামী। পরবর্তীতে আরেকবার ছোটবোনের সাথে দেখা হলে জানা যায়, তার স্বামী মদ্যপান, শারীরিক নির্যাতন এবং নানান অশোভন আচরণে জড়িয়ে আছে।
মাহফুজ মণ্ডল, বগুড়া:
বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও এরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল লতিফ মন্ডলের কনিষ্ঠ কন্যা ফাহিমা আক্তার (ডাকনাম ফাইমা) স্বামীর নির্মম নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে, ২৭ আগস্ট বুধবার সকালে, ঢাকায়। নিহতের মরদেহ বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা রয়েছে।
পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের মতে, ফাহিমা ছিলেন বগুড়া এফ ইউ স্কুল এবং ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের সাবেক ছাত্রী। শৈশব থেকে তিনি ভদ্রতা, সৌন্দর্যবোধ ও পরিপাটির জন্য পরিচিত ছিলেন। কিন্তু বিবাহিত জীবনে তিনি ছিলেন এক নীরব যোদ্ধা দাম্পত্য নির্যাতনের শিকার হয়েও বারবার চুপ থেকেছেন, যাতে নিজের সম্মান ও আত্মসম্মান অক্ষুণ্ণ থাকে।
তার এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী জানান, প্রায় দেড় বছর আগে ফাহিমা তার সাথে যোগাযোগ করে এক ব্যক্তির অনৈতিক সম্পর্কের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মুখ ফুটে স্বীকার করেননি যে লোকটি তার স্বামী। পরবর্তীতে আরেকবার ছোটবোনের সাথে দেখা হলে জানা যায়, তার স্বামী মদ্যপান, শারীরিক নির্যাতন এবং নানান অশোভন আচরণে জড়িয়ে আছে।
ওই বান্ধবির ভাষায়, “ও ছিলো ভীষণ ভালো মানুষ ভদ্র, সুশীল, পরিপাটি। ওর জীবনের শেষ অধ্যায় যে এত নিষ্ঠুর হবে, তা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে,” চোখের জল আটকে রাখতে না পেরে বলেন তার শৈশবসাথী। এ ঘটনায় স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি ফাহিমার হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে আর কোনো নারী এভাবে নীরবে নির্যাতনের শিকার না হন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় ঢাকার রূপনগর থানার সাব ইন্সপেক্টর মিঠু মিয়া জানান, এ ঘটনায় নিহতের বোন হাবিবা খাতুন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী মিনারুল আকবরকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে ফাইমা আক্তারের লাশ আজ ঢাকা সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপালে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের লোকজনের নিকট হস্তান্তর করা হবে বলে এই তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান।