চুয়াডাঙ্গায় ১০ ফুট লম্বা অজগর উদ্ধার

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কৃষকরা মাঠে ধান কাটার সময় ধান কাটার মেশিনের নিচে বিশাল আকৃতির পাহাড়ী অজগরটি দেখতে পান। অজগরটি দেখে আতঙ্কে অনেকেই সাপটি মারতে উদ্যত হলে স্থানীয় যুবক সাদ্দাম হোসেন এগিয়ে আসেন এবং সাহসিকতার সঙ্গে সাপটিকে বস্তাবন্দি করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। এ সময় অজগরটি সাদ্দাম হোসেনকে কামড়েও দেয়।
এম এ মামুন, চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় ধান ক্ষেতে পাওয়া গেল পাহাড়ী অজগর সাপ। এলাকার কৃষকরা ধান কাটার সময় ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করে ১০ ফিট লম্বা ও ১৫ কেজি ওজনের পাহাড়ি অজগরটি উদ্ধার করেন। বনবিভাগের ভাষ্য অনুযায়ী, দেশের সমতল ভূমিতে পাওয়া এটাই সম্ভবত সবচেয়ে বড় অজগর সাপ।
অজগরটি দামুড়হুদা বন বিভাগ থেকে বর্তমানে খুলনা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগের কাছে রয়েছে। বন বিভাগ সুবিধামত সময়ে খুলনা সুন্দরবনে অবমুক্ত করবে বলে দামুড়হুদা বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার জুড়নপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে মাঠে মেশিনে ধান কাটার সময় পাহাড়ি অজগরটি গ্রানবাসীদের হাতে ধরা পড়ে।
দামুড়হুদা উপজেলা বনবিভাগের অফিসার মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কৃষকরা মাঠে ধান কাটার সময় ধান কাটার মেশিনের নিচে বিশাল আকৃতির পাহাড়ী অজগরটি দেখতে পান। অজগরটি দেখে আতঙ্কে অনেকেই সাপটি মারতে উদ্যত হলে স্থানীয় যুবক সাদ্দাম হোসেন এগিয়ে আসেন এবং সাহসিকতার সঙ্গে সাপটিকে বস্তাবন্দি করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। এ সময় অজগরটি সাদ্দাম হোসেনকে কামড়েও দেয়। তবে,অজগর নির্বিষ হওয়ায় তিনি শারীরিকভাবে গুরুতর কোনো সমস্যায় পড়েননি। এ ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং বহু মানুষ সাপটি দেখতে সাদ্দামের বাড়ি ভিড় জমায়।
তিনি বলেন, এরপর আমরা খবর পেয়ে খুলনা বন বিভাগের রেসকিউ টিমকে খবর দিলে তারা রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অজগরটি বুঝে নেয়।
চুয়াডাঙ্গার পরিবেশবাদী সংগঠন ‘পানকৌড়ি’র প্রতিষ্ঠাতা বখতিয়ার হামিদ জানান, প্রাথমিকভাবে শনাক্তে বোঝা যাচ্ছে সাপটি দেশীয় অজগর বা ময়াল সাপ, যা ইন্ডিয়ান রক পাইথন নামেও পরিচিত। এটি সম্পূর্ণ নির্বিষ প্রজাতির সাপ।
তিনি আরও বলেন, “চুয়াডাঙ্গায় এই সাপের রেকর্ড এই প্রথম। অতিবৃষ্টির কারণে এটি দেখা দিতে পারে। তবে ভয়ের কিছু নেই। বরং স্থানীয়রা যে সাপটি মেরে ফেলার বদলে উদ্ধার করেছে, এজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমাদের সবার সচেতন হওয়া জরুরি।”
দামুড়হুদা উপজেলার বনবিভাগের মতে পাহাড়ী অজগর সাধারনত চট্টগ্রাম বা পাহাড়ী জঙ্গলে থাকে। এরা ৪০ থেকে ৪৫ ফুট লম্বা ও ১৫০ থেকে ১৬০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয় । চলতি মাসে ভারতসহ বাংলাদেশে ব্যপক বর্ষা ও বন্যা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ভারত থেকে চুয়াডাঙ্গার ভৈরব নদ অথবা মাথাভাঙ্গায় বর্ষার পানিতে ভেসে পাহাড়ি অজগরটি এই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল। সাপটি সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হবে।