মোদি ম্যাজিক ম্লান,জনপ্রিয়তায় পতনের ইঙ্গিত

৪২ শতাংশ মানুষ মনে করতেন গণতন্ত্র হুমকির মুখে, এবার সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৮ শতাংশ। এছাড়া প্রায় অর্ধেক উত্তরদাতা মনে করেন কেন্দ্রীয় সংস্থা ও রাজ্যপালদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে আস্থাও তিন বছরে ৫৫ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৩৮ শতাংশে।
ডেস্ক রিপোর্ট:
ভারতে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নরেন্দ্র মোদি সরকার নানা বড় প্রকল্প ও রামমন্দিরের মতো প্রতীকী সাফল্যে জনগণের সমর্থন ধরে রেখেছিল। কিন্তু সর্বশেষ ‘মুড অফ দ্য নেশন’ সমীক্ষা বলছে, সেই জনপ্রিয়তা এখন নিম্নমুখী।
২০২১ সালে মোদির প্রতি সমর্থন যেখানে ছিল ৭০ শতাংশ, ২০২৫ সালে এসে তা দাঁড়িয়েছে ৫৮ শতাংশে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি দীর্ঘমেয়াদি পতনের ইঙ্গিত। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যে এনডিএ সরকারের প্রতি সন্তুষ্টির হার কমেছে ১০ শতাংশ।
গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগও বেড়েছে। গত বছর ৪২ শতাংশ মানুষ মনে করতেন গণতন্ত্র হুমকির মুখে, এবার সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৮ শতাংশ। এছাড়া প্রায় অর্ধেক উত্তরদাতা মনে করেন কেন্দ্রীয় সংস্থা ও রাজ্যপালদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে আস্থাও তিন বছরে ৫৫ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৩৮ শতাংশে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রেও হতাশার সুর। একসময় মোদি ও মনমোহন সিংয়ের মধ্যে জনপ্রিয়তার ব্যবধান স্পষ্ট থাকলেও এখন তা প্রায় নেই—মোদি পেয়েছেন ৪৫ শতাংশ সমর্থন, মনমোহন সিং ৪৩ শতাংশ। পাশাপাশি, ৭২ শতাংশ মানুষ বেকারত্বকে বড় সমস্যা বলছেন, আর ৯২ শতাংশ জানিয়েছেন জীবনের খরচ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিরোধী কংগ্রেস নতুন করে শক্তি অর্জন করছে। ৬৬ শতাংশ মানুষ তাদের প্রধান বিকল্প শক্তি হিসেবে দেখছেন। লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীর জনপ্রিয়তাও বেড়েছে—৫০ শতাংশ তার কাজকে ইতিবাচক, ২৮ শতাংশ অসাধারণ বলেছেন।
সমীক্ষার সামগ্রিক চিত্র বলছে—রামমন্দির ও ধর্মীয় প্রকল্প মোদি সরকারের বড় সাফল্য হলেও অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, গণতন্ত্র ও সম্প্রীতির প্রশ্নে জনগণের আস্থা দ্রুত কমছে। বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন সময়ে ভারতের রাজনীতিতে এটি মোদি সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।