রৌমারীতে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী মিলার নাসির উদ্দিন লাল মিয়াকে বরাদ্দ দেয়া হয় ৫২ মে. টন চাল। তার মধ্যে প্রথমে ৪২ মে.টন ও পরে ১০.০২০ মে.টন চাউল ২ কিস্তিতে গুদামে জমা দেন। তবে ৪২ মে. টন চাউলের মূল্য নাসির উদ্দিন লাল মিয়ার ব্যাংক একাউন্টে দিলেও ১০.০২০ মে. টন চাউলের মূল্য ৪ লাখ ৯০ হাজার ৯৮০ টাকা নাসির উদ্দিন লালের ব্যাংক একাউন্টে না দিয়ে বিলটি শামীম এন্টারপ্রাইজ এর ব্যাংক একাউন্টে জমা দিয়ে পরে চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। অপরদিকে ১২’শ ২৯ টি নতুন খালি বস্তা গুদামে না এনে পরিবহন ঠিকাদারের নিকট প্রায় ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে নিম্নমানের বস্তা ক্রয় করে মিলারদের নিকট বিতরণ করেন।
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
আরসি ফুড ও ডিসি ফুডের আর্শিবাদ পুষ্ট বহুল আলোচিত, বিতর্কিত, জালিয়াতির কারিগড়, রৌমারী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) শহীদুল্লা বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে গত বৃহস্পতিবার নাসির উদ্দিন লাল বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ ডিসি, ডিসি ফুড ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, বদলী হয়েও অনিয়ম দুর্নীতির পাহাড় গড়ছেন শহীদুল্লাহ। দীর্ঘদিন যাবত তার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত হলে রহস্যজনক কারনে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। এর আগেও অনিয়মের বিষয়ে জাতীয়, আঞ্চলিক ও লোকাল পত্রিকায় ঢালাও ভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী মিলার নাসির উদ্দিন লাল মিয়াকে বরাদ্দ দেয়া হয় ৫২ মে. টন চাল। তার মধ্যে প্রথমে ৪২ মে.টন ও পরে ১০.০২০ মে.টন চাউল ২ কিস্তিতে গুদামে জমা দেন। তবে ৪২ মে. টন চাউলের মূল্য নাসির উদ্দিন লাল মিয়ার ব্যাংক একাউন্টে দিলেও ১০.০২০ মে. টন চাউলের মূল্য ৪ লাখ ৯০ হাজার ৯৮০ টাকা নাসির উদ্দিন লালের ব্যাংক একাউন্টে না দিয়ে বিলটি শামীম এন্টারপ্রাইজ এর ব্যাংক একাউন্টে জমা দিয়ে পরে চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।
অপরদিকে ১২’শ ২৯ টি নতুন খালি বস্তা গুদামে না এনে পরিবহন ঠিকাদারের নিকট প্রায় ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে নিম্নমানের বস্তা ক্রয় করে মিলারদের নিকট বিতরণ করেন।
এদিকে গত আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহের নাসির উদ্দিন লাল মিয়ার নামে বরাদ্দকৃত ২ মে. টন ৭ শত কেজি চাল ও প্রায় ৩ হাজার খালি নতুন বস্তা বরাদ্দ ছিল। উক্ত বরাদ্দের চাল ও বস্তার আনুমানিক মূল্য ৩ লাখ ১১ হাজার ৩শত টাকা না দিয়ে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ ইসলাম রহস্যজনকভাবে আত্মসাৎ করেন। খাদ্য গুদাম কর্মকার্তার দুর্নীতি ও তার বরাদ্দের আত্মসাতকৃত অর্থ উত্তোলনে ব্যর্থ হলে কুড়িগ্রাম জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং ৬৬/৫৫। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।
অভিযোগে আরোও উল্লেখ্য যে, চট্রগ্রাম হতে রৌমারী খাদ্য গুদামে চাল বরাদ্দের আদেশ হয়। সেই চাল গুদামে না এনে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ ও পরিবহন ঠিকাদারের যোগসাজসে ৮২ লাখ টাকা বিক্রি করে রৌমারী সোনালী ব্যাংকে তার নিজ একাউন্টে জমা করেন। যাহার একাউন্ট নম্বর ০১০২৪১১৪-এ। উক্ত টাকা দিয়ে বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিম্নমানের খাওয়ার অযোগ্য চাউল কম দামে ক্রয় করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ডিলারদের নিকট বিক্রি করেন।
এ নিয়ে কার্ডধারী সুবিধাভোগিরা চাল গ্রহণ না করে প্রাথমিকভাবে মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান। তা ছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চাউলের নমুনা দিলেও কোন প্রকার প্রতিকার পাওয়া যায়নি। অবশেষে কার্ডধারী সুবিধাভোগীদেরকে চাউল নিতে বাধ্য করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সুবিধাভোগীরা চাউল না নিয়ে প্রতিবাদ গড়ে তুলেছে। এমনতাবস্থায় টিএন্ডটি মোড় কেন্দ্রের ডিলার আজেমা খাতুনের পক্ষে স্বামী মামুন খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেয় এবং সুবিধাভোগীদের আন্দোলনের মুখে পড়ে নিম্নমানের চাউলগুলি গুদামে ফেরত নিয়ে ভালো চাল দিতে বাধ্য হয়।
এবিষয়ে রৌমারী ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ ইসলামের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ময়মনসিংহ হাসাপাতালে ভর্তি রয়েছি। তাই এবিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।