নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বারবার অনুরোধ করেও পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে দেয়নি। বক্তব্য চলাকালীন হঠাৎ করেই পুলিশ জলকামান থেকে পানি ছোড়ে এবং কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন। দলের দাবি, পুলিশ অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে এবং এতে অন্তত কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম গণমাধ্যমে বলেন, “আমরা তাদের সমাবেশ করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তারা নিষেধ অমান্য করে সড়কে সমাবেশ শুরু করে। পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সে কারণে আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিই।”
বাংলার ২৪ ঘণ্টা রিপোর্ট:
রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ডাকা কর্মী সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে পুলিশ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এতে জাপার নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন এবং আশপাশের সড়কে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। এতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারীসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে যোগ দেন। তখন থেকেই কাকরাইল ও আশপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
জাপার নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বারবার অনুরোধ করেও পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে দেয়নি। বক্তব্য চলাকালীন হঠাৎ করেই পুলিশ জলকামান থেকে পানি ছোড়ে এবং কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন। দলের দাবি, পুলিশ অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে এবং এতে অন্তত কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম গণমাধ্যমে বলেন, “আমরা তাদের সমাবেশ করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তারা নিষেধ অমান্য করে সড়কে সমাবেশ শুরু করে। পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সে কারণে আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিই।”
জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ, দলীয় প্রতীক নিয়ে জটিলতা ও নেতৃত্বের বিরোধসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে শনিবার জি এম কাদের জরুরি বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠক ঘিরেই কাকরাইল এলাকায় জাপার নেতাকর্মীদের সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ঘটনার সময় নেওয়া ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, পুলিশের জলকামান থেকে পানি ছোড়া হচ্ছে এবং সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠছে। সড়কে থাকা মানুষজন দ্রুত সরে যাচ্ছেন, আর দলীয় কর্মীরা আশ্রয় নিচ্ছেন আশপাশের গলিতে। যদিও আহতের সঠিক সংখ্যা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি, তবে কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে রাজধানীতে এমন রাজনৈতিক উত্তেজনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করতে পারে। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশের অধিকার যেমন আছে, তেমনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও দায়িত্ব আছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা—তবে দুই পক্ষের মধ্যে সমন্বয় ও সংলাপ না থাকায় এমন সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
ঘটনার পর বিকেলেই এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয় এবং যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও জাপার নেতারা দাবি করেছেন, তাদের কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করে সরকার বিরোধী কণ্ঠরোধের চেষ্টা চলছে।