ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ, চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা

পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এবং পরবর্তী হেনস্তার ঘটনার জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের দাবি, মাসকান্দার ঘটনায় এক সহকর্মী জেলে থাকায় এবং কিছু বাস জব্দের হুমকির প্রতিবাদে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
ডেস্ক রিপোর্ট:
ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে সব ধরনের বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এই রুটের পরিবহন চলাচল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামীসহ নানা গন্তব্যে যাত্রা করা সাধারণ মানুষ।
পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এবং পরবর্তী হেনস্তার ঘটনার জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের দাবি, মাসকান্দার ঘটনায় এক সহকর্মী জেলে থাকায় এবং কিছু বাস জব্দের হুমকির প্রতিবাদে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
ইউনাইটেড পরিবহনের চালকের সহকারী সোহেল রানা বলেন, “বাস বন্ধ থাকলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হয়। কিন্তু এবার বাস বন্ধের যৌক্তিক কারণ রয়েছে। একটি ঘটনায় শ্রমিক জেলে, অথচ দাবি করা হচ্ছে আরও ১৬টি বাস জব্দ করতে হবে। এসব বাসে শ্রমিকদের রুজিরুজকার জড়িত।”
এদিকে মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের প্রায় ৩০০টি বাস টার্মিনালে আটকে রয়েছে। ফলে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর ও জামালপুর থেকে ঢাকাগামী সব দূরপাল্লার বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
এ ঘটনায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সকাল থেকে যাত্রার উদ্দেশ্যে টার্মিনালে আসা অনেকেই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বাড়ি ফিরছেন। কেউ কেউ বিকল্প যানবাহনের খোঁজে দিশেহারা।
একজন ভুক্তভোগী যাত্রী বলেন, “আমাদের দিকটা কেউ ভাবছে না। দুই পক্ষ আলোচনায় বসে সমাধান করুক, কিন্তু আমরা কেন কষ্ট পাবো?”
অন্যদিকে পরিবহন শ্রমিকদের একাংশ সকাল ৮টার দিকে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা ও ‘রাজনীতিমুক্ত পরিবহন ব্যবস্থা’ নিশ্চিত করার দাবিতে অনশন ধর্মঘটেও বসেন।
ময়মনসিংহ মোটরযান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী বলেন, “আমাদের শ্রমিকদের বারবার হয়রানি করা হচ্ছে। এক সহকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে—এটা ঠিক হয়নি। শ্রমিকদের ক্ষোভ ও প্রতিবাদ যথার্থ।”
এদিকে আন্দোলনকারী পক্ষ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা জানানো হলেও, পরিবহন চলাচল এখনও স্বাভাবিক হয়নি। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে যাত্রী ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চলছে।