অতিরিক্ত হাঁটায় বাড়তে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকি!

হাঁটা অবশ্যই ভালো অভ্যাস, তবে তার পরিমাণ ও ধরন হওয়া উচিত আপনার বয়স, ওজন ও স্বাস্থ্য অনুযায়ী। হাঁটার পাশাপাশি বিশ্রাম, অন্যান্য শরীরচর্চা এবং পেশির ভারসাম্য রক্ষার ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে।
নিয়মিত হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এ কথা আমরা সবাই জানি। তবে প্রতিদিন ১০ হাজার পা হাঁটাকে অনেকেই ‘স্বর্ণমানদণ্ড’ ধরে নিয়ে হাঁটেন, ভাবেন এটাই সুস্থ থাকার চাবিকাঠি।
অথচ চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত হাঁটার অভ্যাস কখনো কখনো শরীরের ক্ষতির কারণও হতে পারে। সবার শারীরিক গঠন ও সক্ষমতা এক নয় তাই হাঁটার মাত্রাও হওয়া উচিত ব্যক্তিগতভাবে নির্ধারিত।
চলুন জেনে নিই, প্রতিদিন অতিরিক্ত হাঁটার ফলে শরীরে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে—
প্রতিদিন দীর্ঘ সময় হাঁটার ফলে হাঁটু, কোমর ও গোড়ালির সন্ধিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। বিশেষ করে যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের হাঁটুতে দ্রুত ব্যথা দেখা দিতে পারে। এ সমস্যা এড়াতে আরামদায়ক জুতো পরা ও নরম মাটিতে হাঁটার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
হাঁটার ফলে সাধারণত শরীরের নিচের অংশ সুঠাম হয়, তবে ওপরের অংশে খুব একটা প্রভাব পড়ে না। এর ফলে শরীরের পেশিগুলোর মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রতিদিন একই গতিতে ও একই পরিবেশে হাঁটলে শরীর ও মস্তিষ্ক সেই অনুশীলনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে করে হাঁটার উপকার কমে যায়। এই সমস্যা দূর করতে মাঝে মাঝে পাহাড়ি বা ঢালু পথে হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়।
যাঁরা ব্যস্ত জীবনে সময় বের করে হাঁটার চেষ্টা করেন, তাঁদের অনেকে অতিরিক্ত হাঁটার ফলে ক্লান্তি, পেশি ব্যথা ও ঘুমের সমস্যা অনুভব করেন। এতে শরীরচর্চার প্রতি অনীহা তৈরি হতে পারে।
অনেকে ভাবেন, হাঁটাই যথেষ্ট। তাই অন্য কোনো শরীরচর্চা করেন না। অথচ সুস্থ ও সুষম দেহের জন্য হাঁটার পাশাপাশি ওজন তোলার ব্যায়াম বা স্ট্রেচিংয়ের মতো অন্যান্য অনুশীলনও জরুরি।
হাঁটা অবশ্যই ভালো অভ্যাস, তবে তার পরিমাণ ও ধরন হওয়া উচিত আপনার বয়স, ওজন ও স্বাস্থ্য অনুযায়ী। হাঁটার পাশাপাশি বিশ্রাম, অন্যান্য শরীরচর্চা এবং পেশির ভারসাম্য রক্ষার ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে।
সুস্থ থাকার মূলমন্ত্র, বলেন বিশেষজ্ঞরা—‘ব্যালান্সই হচ্ছে আসল স্বাস্থ্য রহস্য।’ হাঁটা হোক, তবে তা যেন শরীরের জন্য চাপ নয়, বরং প্রাণের সঞ্চারক হয়।