জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে পছন্দের ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়ার মাধ্যমে ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ট্রাস্ট সচিবের বিরুদ্ধে ৫০ লক্ষাধিক টাকার আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের শেষ সময়ে এসে তড়িঘড়ি করে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়ার জন্য আওয়ামীলীগের শীর্ষ এক নেতা তদবির করেন। ৫ আগস্ট আকষ্মিকভাবে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ার পরও আর্থিক সুবিধা নিয়ে আওয়ামী সরকারের আমলে একচেটিয়া কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ পাওয়া ঐ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেই কার্যাদেশ দেয়ার সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন।
জানা গেছে, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত ৯০টি প্রকল্প মূল্যায়ন শীর্ষক প্রকল্পের কনসালটিং ফার্ম নিয়োগের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ফিক্সড বাজেট মেথডে প্রকল্পটির প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ৬শ’ টাকা। দরপত্রে গত ৫ মে’র মধ্যে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট, ইওআই জমা দিতে বলা হয়। এরপর গত ১৪ জুলাই তড়িঘড়ি করে সীমিত সংখ্যক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক বাছাই তালিকা করে তাদের কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাবনা জমা দিতে বলা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের এক কর্মকর্তা জানান, শর্ট লিস্টের পরই প্রকল্পটির কার্যাদেশ পেতে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের তদবির শুরু হয়। ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজধানীর বেইলী রোডের একটি রেস্টুরেন্টে বসে একাধিকবার আগ্রহী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে দেনদরবার করে অবশেষে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রকল্পটি ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট ডিজাইন অ্যান্ড সাভিসেস লিমিটেড (ডিপিডিএস) ও হাউজ অব কনসালট্যান্ট লিমিটেড নামক জয়েন্ট-ভেঞ্চার কোম্পানিকে দেয়ার বন্দোবস্ত হয়।
জানা যায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডিপিডিএস আওয়ামীলীগ নেতাদের ব্যবহার করে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদি সরকারের আমলে শতশত কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। ট্রাস্টের এক কর্মকর্তা জানান, দরপত্র আহ্বানের পর ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন বেশ কয়েকবার ট্রাস্টে এসেছেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজেও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য রাজধানীর বেইলী রোডে ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সাথে দর কষাকষি করেন। অবশেষে ৫০ লাখ টাকায় প্রকল্পটি ডিপিডিএসকে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ঐ কর্মকর্তা আরো জানান, ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম একজন ঘুষখোর, দুর্নীতি পরায়ন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের একনিষ্ঠ কর্মকর্তা। ঘুষ ছাড়া তিনি কোনো বিল পাশ করেন না। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এই ট্রাস্টের বাস্তাবায়নাধীন সব প্রকল্পই ছিল হরিলুটের কারবার।
এ বিষয়ে, জানতে চাইলে ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা সত্যি নয়, বলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।