জুলাই সনদের খসড়া চুড়ান্ত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রাণদানকারীদের সম্মানে সনদকে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হিসেবে কার্যকর করা হবে। জনগণের অভিপ্রায়কে সর্বোচ্চ আইন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদের সব নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সনদের ব্যাখ্যা করার এখতিয়ার থাকবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের হাতে। খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, সনদের বৈধতা বা কর্তৃত্ব আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পুনর্লিখনের মাধ্যমে সংবিধান ও আইন হালনাগাদ করা হবে। গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা, বিচার ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে। অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কারগুলো নির্বাচনের আগেই কার্যকর করা হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’-এর সমন্বিত পূর্ণাঙ্গ খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ৮৪ দফা সংস্কার প্রস্তাব। গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন খসড়াটি ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পাঠিয়েছে। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে দলগুলোকে মতামত জানাতে বলা হয়েছে।
খসড়ায় সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এর বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা কিংবা জারির কর্তৃত্ব কোনো আদালতে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে ভিন্নতা থাকলেও সনদ প্রাধান্য পাবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত পাওয়ার পর কোন কোন সংস্কার আসন্ন নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নযোগ্য হবে তা নির্ধারণ করা হবে। অন্যদিকে সনদ বাস্তবায়নের পথ খুঁজতে গতকাল সংসদের কমিশন কার্যালয়ে বৈঠক করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বিএনপি আগেই জানিয়েছে, সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত সংস্কারগুলো তারা আগামী সংসদে বাস্তবায়ন করবে। তবে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ অধিকাংশ দল বলছে, সনদকে আইনি ভিত্তি দিয়ে এর অধীনে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। গতকাল এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনও একই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
খসড়ার অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রাণদানকারীদের সম্মানে সনদকে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হিসেবে কার্যকর করা হবে। জনগণের অভিপ্রায়কে সর্বোচ্চ আইন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদের সব নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সনদের ব্যাখ্যা করার এখতিয়ার থাকবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের হাতে। খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, সনদের বৈধতা বা কর্তৃত্ব আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পুনর্লিখনের মাধ্যমে সংবিধান ও আইন হালনাগাদ করা হবে। গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা, বিচার ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে। অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কারগুলো নির্বাচনের আগেই কার্যকর করা হবে।
এর আগে কমিশন যে নমুনা সনদ দিয়েছিল, তাতে উল্লেখ ছিল আগামী সংসদে গঠিত সরকার দুই বছরের মধ্যে সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে। বিএনপি এতে সম্মত হলেও জামায়াত ও এনসিপি তা প্রত্যাখ্যান করেছিল। তবে সর্বশেষ খসড়ায় আইনি ভিত্তির বিষয়টি সংযোজন করায় জামায়াত আংশিক সন্তুষ্টি জানিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, খসড়া হাতে পেয়েছে দল এবং পড়ে মতামত জানানো হবে। জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, বিষয়টি দলীয় ফোরামে আলোচনা করে আনুষ্ঠানিক মতামত জানানো হবে।