বগুড়ায় আ.লীগ নেতা দুলুর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

তদন্তে দুদক কর্মকর্তারা ভিন্ন চিত্র পান। যাচাই-বাছাই শেষে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা দুলুর প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ ঘোষণার চেয়ে অনেক বেশি। তদন্তে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দাঁড়ায় ৬ কোটি টাকারও বেশি। পারিবারিক ঋণ ও খরচ বাদ দিয়ে দুলুর প্রকৃত মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৫৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা, যা জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত বলে দুদক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
বগুড়া অফিস:
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আসাদুর রহমান দুলুর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বুধবার দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বগুড়া আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, দুলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। সে প্রেক্ষিতে তিনি ২০২৩ সালের ২৫ জুন তার সম্পদ বিবরণী জমা দেন। সেখানে তিনি স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে মোট ২ কোটি ৫২ লাখ ৫ হাজার ৪২২ টাকার সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন।
তবে তদন্তে দুদক কর্মকর্তারা ভিন্ন চিত্র পান। যাচাই-বাছাই শেষে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা দুলুর প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ ঘোষণার চেয়ে অনেক বেশি। তদন্তে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দাঁড়ায় ৬ কোটি টাকারও বেশি। পারিবারিক ঋণ ও খরচ বাদ দিয়ে দুলুর প্রকৃত মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৫৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা, যা জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত বলে দুদক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসাদুর রহমান দুলু ইচ্ছাকৃতভাবে তার সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন, আয়ের উৎস গোপন করেছেন এবং অবৈধ সম্পদকে রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে ভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছেন। এভাবে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারার পাশাপাশি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪ (৩) (২) ধারায় অপরাধ করেছেন।
শাজাহানপুর উপজেলার কুন্দইশ গ্রামের মৃত বেলায়েত আলী জোয়ার্দারের ছেলে দুলু দীর্ঘদিন ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত। তিনি জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন এবং একসময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। তবে গত বছর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্তে পাওয়া তথ্য-প্রমাণ যথেষ্ট শক্তিশালী এবং আদালতে অভিযোগ প্রমাণ করার মতো নথি তাদের হাতে রয়েছে।
আত্মগোপনে থাকায় অভিযুক্ত দুলুর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।