রসায়নে নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী

তিন বিজ্ঞানী এমন কিছু আণবিক কাঠামো তৈরি করেছেন, যা দিয়ে গ্যাস এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ প্রবাহিত হতে পারে। এই উপকরণগুলোর মাধ্যমে মরুভূমির বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করা, কার্বন ডাই-অক্সাইড ক্যাপচার বা বিষাক্ত গ্যাস মজুত করার কাজে ব্যবহার করা যাবে। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স জানিয়েছে, উদ্ভাবিত উপাদানগুলোর পৃষ্ঠতল বা সারফেস এরিয়া অবিশ্বাস্যভাবে বড়।
চিকিৎসা ও পদার্থবিজ্ঞানের মতো এ বছর রসায়নেও যৌথভাবে নোবেল পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন- সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন এবং ওমার এম ইয়াঘি। নতুন আণবিক কাঠামো বা মলিকিউলার আর্কিটেকচার উদ্ভাবনের জন্য নোবেল পেলেন তারা।
উদ্ভাবিত উপাদানগুলো জলবায়ুর পরিবর্তন এবং সুপেয় পানির অভাবের মতো বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বুধবার বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোম থেকে এ বছরের রসায়নে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, ওই তিন বিজ্ঞানী এমন কিছু আণবিক কাঠামো তৈরি করেছেন, যা দিয়ে গ্যাস এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ প্রবাহিত হতে পারে। এই উপকরণগুলোর মাধ্যমে মরুভূমির বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করা, কার্বন ডাই-অক্সাইড ক্যাপচার বা বিষাক্ত গ্যাস মজুত করার কাজে ব্যবহার করা যাবে। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স জানিয়েছে, উদ্ভাবিত উপাদানগুলোর পৃষ্ঠতল বা সারফেস এরিয়া অবিশ্বাস্যভাবে বড়।
নোবেল কমিটির সদস্য ওলফ রামস্ট্রম এটিকে বিখ্যাত হ্যারি পটার সিরিজের হারমাইনি’র জাদুকরী ব্যাগের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের অল্প পরিমাণ উপাদান হারমাইনি’র হ্যান্ডব্যাগের মতো হতে পারে। এটি ক্ষুদ্র আয়তনে বিশাল পরিমাণ গ্যাস ধরে রাখতে পারে। একটি ছোট চিনির কিউবের সমান এই ছিদ্রযুক্ত উপাদানে একটি বড় ফুটবল মাঠের সমান পৃষ্ঠতল থাকতে পারে বলে জানান রামস্ট্রম।
নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানীদের মধ্যে সুসুমু কিতাগাওয়া জাপানের কিয়োটো ইউনিভার্সিটি, রিচার্ড রবসোন অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন এবং ওমার ইয়াগি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক। পুরস্কার ঘোষণার পর কিতাগাওয়া বলেন, তিনি এই সম্মানে খুব প্রশংসিতবোধ করছেন।
নিজের স্বপ্ন ব্যক্ত করে এই বিজ্ঞানী বলেন, আমার স্বপ্ন হলো বাতাস থেকে সিও২ (ঈঙ২), অক্সিজেন বা জলীয় বাষ্পের মতো উপাদানগুলো আলাদা করে সেগুলোকে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় উপকরণে রূপান্তরিত করা। বিজ্ঞানীদের এই উদ্ভাবনকে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স স্বাগত জানিয়ে বলেছে, এর মাধ্যমে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারবে রসায়নবিদরা।
নোবেল বিজয়ী এই বিজ্ঞানীরা পাবেন একটি মেডেল, একটি সনদপত্র এবং মোট ১১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। যেসব বিভাগে একাধিক নোবেলজয়ী থাকবেন, তাদের মধ্যে এই ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ভাগ হয়ে যাবে। বর্তমান বাজারে এর মান প্রায় ১২ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা। বুধবার এ বছরের তৃতীয় ধাপের নোবেল ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাহিত্যের নোবেল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পেয়েছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড বেকার, জন জাম্পার এবং বৃটিশ বিজ্ঞানী ডেমিস হাসাবিস। প্রোটিনের গঠন বিন্যাস ও নতুন প্রোটিন তৈরির জন্য তাদের নোবেল দেয়া হয়।