ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেল যুদ্ধবিরতি চুক্তি

দুই বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসানে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিল ইসরায়েল ও হামাস। শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে। মধ্যস্থতাকারীদের সমঝোতার ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়, যা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পথ খুলে দেয়।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেবে এবং ধাপে ধাপে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার ইংরেজি ভাষার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, “সরকার এইমাত্র জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে চুক্তির কাঠামো অনুমোদন করেছে।”
এই ঘোষণার পর ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। দুই বছর ধরে চলা সংঘাতে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা এই চুক্তিকে যুদ্ধের অবসানে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
হামাসের নির্বাসিত গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে তিনি যুদ্ধের অবসানের নিশ্চয়তা পেয়েছেন। ইসরায়েল সরকারের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, চুক্তির অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি শুরু হবে। ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় বর্তমানে ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মি জীবিত এবং ২৬ জন মৃত রয়েছেন, এছাড়া দুজনের অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।
হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জীবিতদের মুক্তি দেওয়া সহজ হলেও নিহতদের মরদেহ উদ্ধারে বেশি সময় লাগতে পারে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী বহনকারী ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ করতে পারবে, যা শরণার্থীশিবিরে বসবাসরত লাখ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য অত্যন্ত জরুরি।
এই চুক্তির পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম ধাপও ভূমিকা রেখেছে। গত বুধবার তিনি জানান, হামাস ও ইসরায়েল তার পরিকল্পনার প্রথম ধাপে একমত হয়েছে।