দক্ষিণ লেবাননের আল-মুসলেহ সড়কে অবস্থিত ছয়টি ভারী যন্ত্রপাতি সংরক্ষণের ইয়ার্ডে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনশত’র বেশি যানবাহন ধ্বংস হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালিত ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) বরাতে আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ধ্বংস হওয়া যানবাহনের মধ্যে রয়েছে বুলডোজার, এক্সকাভেটরসহ বিভিন্ন প্রকৌশল সরঞ্জাম। হামলার ফলে পুরো এলাকা আগুনে ঘেরা হয়ে পড়ে এবং সড়কটি গুরুতর ক্ষতির কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় এক সিরিয়ান নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আরও ছয়জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন সিরিয়ান ও বাকিরা লেবাননের নাগরিক। সংস্থাটি জানিয়েছে, ধ্বংস হওয়া অবকাঠামো ও যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক শত মিলিয়ন ডলারের সমান হতে পারে। হামলায় ভবন, তাঁবু এবং পার্ক করা আরও কিছু গাড়িও ধ্বংস হয়েছে।
এনএনএ’র বরাতে জানা গেছে, ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকা ছিল লেবাননের অন্যতম বৃহৎ ও সুপরিচিত ভারী যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী কেন্দ্র। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হিজবুল্লাহর অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তাদের মতে, হিজবুল্লাহ এই যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দক্ষিণ লেবানে নিজেদের অবকাঠামো পুনর্গঠনের চেষ্টা করছিল।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এই হামলাকে উগ্র আগ্রাসী কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “এই হামলার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়, কারণ এটি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরপরই ঘটেছে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, ইসরায়েল লেবাননে সংঘাত স্থানান্তরের চেষ্টা করছে।
শনিবার সকাল থেকে ইসরায়েলি ড্রোন বৈরুত ও দক্ষিণাঞ্চলীয় উপশহরগুলোতে ঘোরাফেরা করছে বলে জানিয়েছে এনএনএ। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের রূপ নেয়। এতে ৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ১৭ হাজার জন আহত হন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সংঘাতের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলের জানুয়ারির মধ্যে দক্ষিণ লেবানন থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করার কথা থাকলেও এখনো পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে তাদের সেনা মোতায়েন রয়েছে।