চাকসু নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ও সিলবিহীন ব্যালট নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি উঠে যাওয়া এবং সিলবিহীন ব্যালট পাওয়ার অভিযোগে নির্বাচন ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের কয়েকটি কেন্দ্রে এসব অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ৪০১ ও ৪০২ নম্বর কক্ষ এবং কলা ভবনের ৩১২৪ নম্বর কক্ষে দেখা যায়, ভোটারদের আঙুলে দেওয়া অমোচনীয় কালি সহজেই ঘষে উঠিয়ে ফেলা যাচ্ছে। ছাত্রদল প্যানেলের জিএস প্রার্থী শাফায়াত হোসেন বলেন, “ভোট দেয়ার সাথে সাথে আঙুল থেকে কালি উঠে যাচ্ছে, যা জাল ভোটের সুযোগ তৈরি করছে।” দ্রোহ পর্ষদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী রিজু লক্ষী অবরোধ এবং জিএস প্রার্থী ইফাজ উদ্দিন আহমেদ ইমুও একই অভিযোগ করেন।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ বলেন, “কালি উঠে গেলেও ভোটারদের নাম তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হচ্ছে, তাই পুনরায় ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই।” কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্ধারিত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে জার্মানির অমোচনীয় কালি সময়মতো পৌঁছায়নি।
এছাড়া, চবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন পর্যবেক্ষক সাইফুদ্দিন সালাম মিঠু অভিযোগ করেন, কয়েকটি কেন্দ্রে সিল ছাড়া ব্যালট পাওয়া গেছে। ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, “আমি নিজে ভোট দিয়েছি, কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কালি উঠে গেছে। এতে একাধিকবার ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আইটি ভবনের ২১৪ নম্বর কক্ষে স্বাক্ষরবিহীন প্রায় ২০টি ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তবে ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীরা জানিয়েছেন, তারা নির্বাচন বর্জনের পথে হাঁটছেন না। শাফায়াত হোসেন বলেন, “জয়-পরাজয় যাই হোক, আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে পাশে থাকব।” তিনি আরও বলেন, “আমরা চেয়েছি, নির্বাচন কমিশন ইতিহাসের অংশ হবে।”
এই অনিয়মের অভিযোগে চাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো তদন্ত কমিটি বা পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা আসেনি।