ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিরলস ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, নরওয়ের রাজধানী অসলোতে এক সংবাদ সম্মেলনে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি এই পুরস্কার ঘোষণা করে।
নোবেল কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, মারিয়া কোরিনা মাচাদো স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গত গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য যে সংগ্রাম করেছেন, তা আন্তর্জাতিকভাবে অনুকরণীয়। তিনি ভেনেজুয়েলার জনগণের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন এবং রাজনৈতিক বিরোধীতার মুখেও ছিলেন ঐক্যের প্রতীক।
নোবেল পুরস্কারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে মারিয়াকে “অনন্য সাহসের প্রতীক” হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তিনি ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ। রাজনৈতিক নিপীড়নের মধ্যেও তিনি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পক্ষে সোচ্চার থেকেছেন এবং আন্তর্জাতিক মহলে ভেনেজুয়েলার সংকট তুলে ধরেছেন।
এদিকে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য বছরের শুরু থেকেই আলোচনায় ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছিলেন, সাতটি যুদ্ধ বন্ধে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এমনকি ইসরায়েল ও পাকিস্তানের সরকারপ্রধান, সুইডেন ও নরওয়ের কিছু রাজনীতিবিদও তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত নোবেল কমিটি মারিয়া কোরিনাকেই শান্তির প্রতীক হিসেবে বেছে নেয়।
গত বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছিল জাপানি সংগঠন ‘নিহন হিদানকিও’, যা হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের তৃণমূল আন্দোলনের সংগঠন। পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে তাদের ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
মারিয়া কোরিনা মাচাদোর এই অর্জন শুধু ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং এটি লাতিন আমেরিকার গণতন্ত্রকামী জনগণের দীর্ঘ সংগ্রামের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। শান্তিপূর্ণ উপায়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এই প্রচেষ্টা বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার আন্দোলনের জন্য এক অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।