বগুড়ায় আর.কে পরিবহনের একটি বাসের ভেতর এক তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে বাসের চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম তরুণী (১৭) ওইদিন সকালে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কড্ডার মোড় এলাকা থেকে তার এক বন্ধুর সঙ্গে আর.কে পরিবহনের একটি বাসে করে বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। দুপুর ১২টার দিকে বাসটি শাজাহানপুর উপজেলার বনানী মোড়ে পৌঁছালে অন্য যাত্রীরা নামলেও ড্রাইভার সোহাইল হাসান শাকিব (২৬) ও হেলপার সৈকত (২২) ওই তরুণী ও তার বন্ধুকে নামতে বাধা দেয় এবং জোরপূর্বক বাসের ভেতরেই আটকে রাখে।
পরে ড্রাইভার শাকিব ভিকটিমকে বাসের পেছনের সিটে নিয়ে গিয়ে তার ওপর নির্যাতনের চেষ্টা চালায়। তরুণী চিৎকার করার চেষ্টা করলে আসামী মুখ চেপে ধরে। এ সময় তরুণীর সঙ্গে থাকা বন্ধু বাধা দিতে এগিয়ে এলে ড্রাইভার ও হেলপার তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয় এবং ঢাকাগামী অন্য একটি গাড়িতে তুলে পাঠিয়ে দেয়।
পরে ড্রাইভার ও হেলপার তরুণীকে বাসে করে বগুড়ার পর্যটন মোটেলের পশ্চিমে একটি গাড়ি ওয়াশ ডকে নিয়ে যায়। সেখানে আরও কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি যোগ দিয়ে তাকে ভয়ভীতি দেখায় এবং ঘটনাটি কাউকে না বলার হুমকি দেয়। পরে বাসটি বগুড়ার ঠনঠনিয়া বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছালে তরুণী সুযোগ বুঝে আর.কে পরিবহনের কাউন্টারে বিষয়টি জানায়। কাউন্টার কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে শাজাহানপুর থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং থানা হেফাজতে নেয়।
ঘটনার পর ভিকটিমের ভগ্নিপতি মো. ইউসুফ আলী বাদী হয়ে শাজাহানপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সালের ৯(৪)(খ)/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-১৫, তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০২৫।
মামলার পরপরই শাজাহানপুর থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা এলাকা থেকে প্রধান আসামী ড্রাইভার সোহাইল হাসান শাকিবকে গ্রেপ্তার করে। সে বগুড়ার মাজাহানপুর উপজেলার জয়ন্তীবাড়ি গ্রামের তোজাম্মেল হকের পুত্র। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ভোরে তাকে শাজাহানপুর থানা হেফাজতে নিয়ে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।