বাংলাদেশের আকাশ প্রতিরক্ষায় নতুন যুগের সূচনা

সরকারি সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক প্রতিবেশী অঞ্চলের নিরাপত্তাজটিলতা এবং সীমান্ত-এবং সমুদ্রে রণকৌশলগত চাপ বিবেচনায় বিমানবাহিনীকে দ্রুতভাবে আধুনিক করা জরুরি। এই উদ্যোগ ২০২৫–২৬ অর্থবছরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে।
দেশের আকাশ প্রতিরক্ষাকে আধুনিক করতে দ্রুত উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার; পরিকল্পনায় রয়েছে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ও আক্রমণাত্মক হেলিকপ্টার যোগ করাও। সরকার ও বিমানবাহীনির উর্ধ্বতন সূত্র বলছে — ইতালি, চীন, তুরস্ক ও পাকিস্তান থেকে বিভিন্ন ধরণের এয়ারক্রাফট ক্রয়ের প্রস্তাব শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ইতালি থেকে ১০টি ইউরোফাইটার টাইফুন (৪.৫ প্রজন্ম), তুরস্ক থেকে ছয়টি টি-১২৯ অ্যাটাক হেলিকপ্টার আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এসব ক্রয়বিষয়ক নীতিগত অনুমোদন ও দুটি দেশের সরকারি সমঝোতা সাপেক্ষে চুক্তি চূড়ান্ত হবে।
ইতিমধ্যে বিমান সদর একটি ১২ সদস্যের আন্ত-মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করার পরামর্শ দিয়েছে; কমিটিতে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা থাকবেন। কমিটি দ্রুত কাজ করে খসড়া চুক্তি যাচাই-বাছাই ও দর-কষাকষি করবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া চলতি বছরে চীনের সঙ্গে ২০টি জে-১০সি মাল্টি-রোল বিমানের আলোচনা শুরু হয়েছিল—প্রস্তাবিত খরচ প্রায় ২২০ কোটি ডলার। পাকিস্তান থেকে ১৬টি জে-এফ-১৭ কেনার চুক্তিও ইতিমধ্যে নির্ধারিত হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ৭২০ মিলিয়ন ডলার।
বিমানবাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান এয়ার কমোডর (অব.) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “এ ধরনের ক্রয় বিমানবাহিনীর আধুনিকতার জন্য মাইলফলক।
টাইফুন ও জে-১০সি—উভয়ই বিশ্বমানের প্ল্যাটফর্ম; টাইফুন বহুমুখী ও লং-রেঞ্জ, আর জে-১০সি কার্যকরী ও সাশ্রয়ী।” তিনি আরো বলেন, শুধু প্লেন নয়—রাডার, সার্ভেইল্যান্স, লজিস্টিকস ও দক্ষ জনবল তৈরিতেও গুরুত্ব দিতে হবে।
ইতালির ইউরোফাইটার টাইফুন রয়েছে—দুটি শক্তিশালী ইঞ্জিন, দীর্ঘ রেঞ্জ ও অত্যাধুনিক সেন্সরসহ একাধিক ভূমিকা পালন সক্ষম। তুরস্কের টি-১২৯ হেলিকপ্টার উচ্চ তাপমাত্রা ও পাহাড়ি এলাকায় আক্রমণ ও গোয়েন্দা মিশনে সক্ষম একটি আক্রমণাত্মক হেলিকপ্টার।
জে-১০সি ও জে-এফ-১৭—দুইটাই তুলনামূলকভাবে খরচ-সাশ্রয়ী ও মনুবার্গে ম্যানুভারিংয়ে শক্তিশালী।
সরকারি সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক প্রতিবেশী অঞ্চলের নিরাপত্তাজটিলতা এবং সীমান্ত-এবং সমুদ্রে রণকৌশলগত চাপ বিবেচনায় বিমানবাহিনীকে দ্রুতভাবে আধুনিক করা জরুরি। এই উদ্যোগ ২০২৫–২৬ অর্থবছরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন—বহরে নতুন প্ল্যাটফর্ম যোগ হলে আকাশ প্রতিরক্ষার সক্ষমতা বাড়বে; কিন্তু সফল বাস্তবায়নের জন্য টেকনিক্যাল সাপোর্ট, খুচরা যন্ত্রাংশ ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা সমান্তরালভাবে জরুরি।