ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মেছোবিড়াল রক্ষায় সচেতনতা কর্মসূচি

একরামুল ইসলাম তুষার, কালীগঞ্জ
বুধবার (১৫ অক্টোবর) ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এক সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশের কৃষি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে মেছোবিড়াল। ধানক্ষেতে ইঁদুর শিকার করে ফসল রক্ষা করা এবং জলাশয়ে রোগাক্রান্ত মাছ খেয়ে পরিবেশ পরিশুদ্ধ রাখার মাধ্যমে এ প্রাণীটি কৃষি ও পরিবেশ দুইয়েরই বন্ধু হিসেবে বিবেচিত।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি মেছোবিড়াল তার গড় আয়ুষ্কালে (প্রায় ১০ বছর) প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার সমমূল্যের ফসল রক্ষা করতে সক্ষম। এই উপকারী ও নিরীহ প্রাণীটিকে সংরক্ষণ করা উচিৎ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয়ের একান্ত সচিব জনাব আশিকুর রহমান শর্মি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জনাব অমিতা মণ্ডল, কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানা নাহিদ এবং সামাজিক বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডেপুটি রেঞ্জ অফিসার) মোঃ শফিকুল ইসলাম।অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মেছোবিড়াল কৃষকের সহায়ক ও প্রকৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী।
এটি ধানক্ষেতে ইঁদুর, ব্যাঙ এবং অন্যান্য ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল রক্ষা করে, একই সঙ্গে জলাভূমিতে অসুস্থ মাছ খেয়ে পানির মান পরিশুদ্ধ রাখে। বক্তারা আরও বলেন, অজ্ঞতার কারণে অনেক মানুষ এই উপকারী প্রাণীটিকে হত্যা করে থাকে, যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
স্থানীয় সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিবেশকর্মী এবং সাধারণ জনগণের উপস্থিতিতে আয়োজিত এই সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে বক্তারা ঐক্যমতে বলেন— ‘মেছোবিড়াল রক্ষা করা মানে প্রকৃতিকে রক্ষা করা, কৃষিকে বাঁচানো। ‘
অনুষ্ঠানে বক্তারা মেছোবিড়াল সংরক্ষণে জনগণের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং স্থানীয় জনগণকে এ প্রাণী হত্যার পরিবর্তে সংরক্ষণে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান। পরে উপস্থিতদের মাঝে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবিষয়ক লিফলেট, পোস্টার ও প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়।
কর্মসূচির মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের মধ্যে মেছোবিড়াল ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর পরিবেশগত গুরুত্ব সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি হয় বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন